আলোচিত অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবীর মিলন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি পরিচালনার জন্য গঠিত কমিটির সদস্য হিসেবে স্থান পেয়েছেন। তিনি ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
সরকারি বেতনে ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে থাকবেন অতিরিক্ত সচিব (ওএসডি) মাহবুব কবীর। তার মতামত নিয়ে ইভ্যালির পরিচালনা কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রিটকারীর আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ মাহসিব হোসেন।
তিনি জানান, তার কাজের প্রতি কমিটমেন্ট দেখে আদালত উনার সঙ্গে কথা বলেছেন এবং ইভ্যালির পরিচালনা কমিটিতে রেখেছেন।
এর আগে পাঁচ সদস্যের কমিটিতে তাকে রাখার বিষয়ে হাইকোর্টের বিচারকও বলেছেন, মাহবুব কবীরের সঙ্গে কথা হয়েছে। কাজের প্রতি তার আগ্রহ দেখে খুব ভালো লেগেছে।
মাহবুব কবীর সর্বশেষ রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ছিলেন। রেল বিভাগের নানা অনিয়ম দূর করতে নতুন নতুন উদ্যোগ নিচ্ছিলেন। গত বছরের ৬ আগস্ট তাকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়। মাহবুব কবীর এর আগে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। কিছু সময়ের জন্য ছিলেন কর্তৃপক্ষের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানও। এ সময় তিনি খাদ্যে ভেজাল ও নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়ে আলোচিত হন।
গত ১৩ অক্টোবর আদালতে তিন সাবেক সচিবের নাম জমা দেওয়ার পরে হাইকোর্ট বলেছিলেন, অতীত কর্মকাণ্ড দেখে ইভ্যালির বোর্ড সদস্য করা হবে। ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির পরিচালনা পর্ষদ গঠনে যাদের নাম উঠে এসেছে, তাদের অতীতের কর্মকাণ্ডসহ সব বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে বোর্ডে পাঠানো হবে বলে মন্তব্য করেন হাইকোর্ট।
প্রতারণার অভিযোগে ইভ্যালির সিইও ও চেয়ারম্যান গ্রেফতার হওয়ায় চার সদস্যের বোর্ড গঠন এবং নথি নিয়ে পরিচালনা পর্ষদ গঠনে হাইকোর্টের আদেশের নির্ধারিত দিনে ১৩ অক্টোবর বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের একক বেঞ্চ এমন মন্তব্য করেন।
এর পরে সোমবার (১৮ অক্টোবর) ইভ্যালি পরিচালনায় পাঁচ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন বোর্ড গঠন করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। এই কমিটির প্রধান করা হয়েছে আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে।
বোর্ডের অন্যা সদস্যরা হলেন- স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন বিভাগের সাবেক সচিব মোহাম্মদ রেজাউল আহসান ও সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবীর, চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট ফখরুদ্দিন আহম্মেদ ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ।
আদালতে আজ আবেদনকারীর পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী এ এম মাছুম ও সৈয়দ মাহসিব হোসেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও প্রতিযোগিতা কমিশনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী তাপস কান্তি বল। রেজিস্ট্রার ফর জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এ কে এম বদরুদ্দোজা।
এর আগে গত ১২ অক্টোবর বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের হাইকোর্ট বেঞ্চ ইভ্যালি পরিচালনার জন্য কমিটি করে দেওয়ার কথা বলেন। এ বিষয়ে বুধবার (১৩ অক্টোবর) হাইকোর্টের আদেশ দেওয়ার কথা ছিল। পরে আদেশের দিন পেছানো হয়।
তারও আগে গত ২২ সেপ্টেম্বর ইভ্যালিকে কেন অবসায়ন করা হবে না, তা জানতে চেয়েছিলেন হাইকোর্ট। এর পর একই ব্যাক্তির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৩০ সেপ্টেম্বর নথিও তলব করে আদেশ দেন আদালত। নথি আসার পর গত ১২ অক্টোবর এ বিষয়ে শুনানিতে ইভ্যালি লিমিটেড পরিচালনার জন্য চার সদস্যের অন্তর্বতীকালীন বোর্ড গঠনের পক্ষে মতামত দেন হাইকোর্ট। এর পরে আজ শুনানির নির্ধারিত দিনে পাঁচ সদস্যের বোর্ড গঠন করা হয়।