বিভিন্ন জেলায় সহিংসতার ঘটনায় ৭১ মামলা, গ্রেপ্তার ৪৫০

নিজস্ব প্রতিবেদক

সহিংসতা

কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে কোরআন অবমাননার ঘটনার জেরে দেশের বিভিন্ন জেলায় সহিংসতায় এখন পর্যন্ত ৭১টি মামলা হয়েছে। এছাড়া সহিংস ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৪৫০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

সোমবার রাতে পুলিশ সদরদপ্তরের মিডিয়া শাখা থেকে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

সূত্র বলছে, সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে পূজামণ্ডপ কেন্দ্রিক অপ্রীতিকর ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৭১টি মামলা হয়েছে। আরও কিছু মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এছাড়া এসব ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ৪৫০ জনকে আটক করা হয়েছে।

আটকের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে সদরদপ্তর। তারা বলছে, অপরাধীদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

গত বুধবার কুমিল্লার একটি পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন পাওয়া যাওয়ার ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এসময় জেলার কয়েকটি পূজামণ্ডপ ভাঙচুর করে দুর্বৃত্তরা। এই ঘটনার জেরে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে স্থানীয় জনতার সংঘর্ষে চারজন মারা যান। এ সময় হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলার ঘটনা ঘটে। এছাড়া শুক্রবার নোয়াখালীর বেগমগঞ্জেও হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় একজন নিহত হন। গতকাল রবিবার রাতে রংপুরের পীরগঞ্জে হিন্দু পল্লীতে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এসব ঘটনায় সারাদেশে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা অনিরপত্তা বোধ করছেন। তবে সরকারের পক্ষ সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তায় সবধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

এদিকে দেশে সাম্প্রদায়িক হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িতদের হুঁশিয়ারি দিয়ে সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, যারা ষড়যন্ত্র করছেন, ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করছেন তারা আর আগাবেন না। আমরা এগুলোকে চিহ্নিত করে অবশ্যই শাস্তির ব্যবস্থা করবো এবং তাদেরকে জনগণের সম্মুখে উপস্থিত করবো।

তিনি বলেন, যারা এ সমস্ত ষড়যন্ত্র করেন তারা এ পথ থেকে ফিরে আসুন। না হলে আপনাদের সম্মুখে বিপদ হাতছানি দিয়ে ডাকছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, হিন্দু-মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব হাজার বছরের কৃষ্টি। সব উৎসবই আমরা হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান ধর্মের লোকেরা একসঙ্গে পালন করি। কিন্তু একের পর এক উসকানি দিয়ে, ধর্মীয় যে বিশ্বাস সেখানে আঘাত হেনে দেশে বিশৃঙ্খলার একটা প্রয়াস আমরা দেখতে পাচ্ছি। আমরা কুমিল্লার ঘটনা দেখলাম, নোয়াখালীর ঘটনা দেখেছি এবং গতকাল রংপুরের ঘটনাও দেখেছি। শুরুটা হয়েছিল রামু থেকে, রামুর পর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দেখেছি। এছাড়া আমরা জঙ্গির উত্থান ও সন্ত্রাসের উত্থান দেখেছি। এসব কিছুর একটাই টার্গেট ছিল- সেটা হলো কীভাবে এই বাংলাদেশকে বিপদে ফেলা যায়, বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে কীভাবে ছিনিমিনি খেলা যায় তাও আমরা দেখতে পেয়েছি।

শেয়ার করুন