আরিয়ান খানের বিরুদ্ধে সাক্ষী জোগাড় করতে মরিয়া এনসিবি। আরিয়ানকে কে বা কারা মাদক সাপ্লাই করত তা জানার জন্য একের পর এক ব্যক্তিকে তলব করে চলেছে এনসিবি। এমনকি গ্রেফতারও করেছে বেশ কয়েকজনকে। কিন্তু এখনও অবধি সেভাবে কাউকেই আরিয়ানের বিরুদ্ধে সাক্ষী হিসাবে পেশ করতে পারেনি এনসিবি।
এবার এনসিবি জোনাল ডিরেক্টর সমীর ওয়াংখেড়ের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ আনলেন মাদক মামলার এক প্রত্যক্ষদর্শী। আরিয়ানের বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য কোটি কোটি টাকা অফার করা হচ্ছে বলে দাবি তার।
আরিয়ান খানকে আটক করার পরই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায় এক ব্যক্তির সঙ্গে আরিয়ানের সেলফি। প্রথমে সবাই ভাবে ওই ব্যক্তি এনসিবির আধিকারিক, কিন্তু পরবর্তীকালে জানা যায় ওই ব্যক্তি এনসিবির কেউ নন। তার নাম কিরণ পি গোসাভি। এ ঘটনার পর থেকেই পলাতক কিরণ পি গোসাভি। এনসিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়, আরিয়ানের বিরুদ্ধে মূল সাক্ষী ওই ব্যক্তি। এবার এনসিবির বিরুদ্ধে মুখ খুললেন কিরণের দেহরক্ষী প্রভাকর সেইল। তিনি জানিয়েছেন, আরিয়ানের বিরুদ্ধে সাক্ষী দেওয়ার জন্য ১৮ কোটি টাকার চুক্তি করেছে এনসিবি।
প্রভাকরের দাবি কিরণকে দিয়ে ফাঁকা পাতায় সই করিয়েছে এনসিবি আধিকারিকরা। স্যাম ডিসুজা নামের কোনো ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলেছিলেন কিরণ। এমনকি সমীর ওয়াংখেড়ের বিরুদ্ধে ৮ কোটি টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ এনেছেন তিনি। প্রভাকরের বক্তব্য তিনি নিজেই কিরণের থেকে নগদ টাকা নিয়ে তা স্যামের হাতে তুলে দিয়েছেন।
এনসিবির প্রেস রিলিজে প্রভাকর সেইলকে সাক্ষী হিসেবে উল্লেখ করেছিল এনসিবি। এবার তার এ বক্তব্যে সমস্যায় সেন্ট্রাল এজেন্সি।
যদিও প্রভাকরের এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন এনসিবি মুম্বাই জোনাল ডিরেক্টর সমীর ওয়াংখেড়ে। এই অভিযোগের উত্তরে তিনি বলেন, সময় এলে এর যথাযথ উত্তর দেবে এনসিবি। এ অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলার পাশাপাশি তিনি বলেন, এনসিবি অফিসে অনেক সিসিটিভি আছে, এতো সহজে সব হওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু সমীর ওয়াংখেড়ের বক্তব্যেও বিতর্ক থামছে না। কারণ বলিউডের একাংশ এবং বেশ কিছু রাজনীতিবিদ দাবি করেছেন, শাহরুখের ছেলেকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।
মুম্বাই ক্রুজ মাদক মামলায় ৩ অক্টোবর এনসিবির হাতে গ্রেফতার হয়েছেন আরিয়ান খান। তারপর থেকে একাধিক বার আরিয়ানের আইনজীবী তার জামিনের আবেদন জানালেও বার বার তা খারিজ হয়ে গেছে। গত বুধবার ফের একবার বিশেষ এনডিপিএস কোর্টও আরিয়ানের জামিনের আবেদন খারিজ করে দেয়। সম্প্রতি ক্রুজ পার্টি কাণ্ড নিয়ে মন্তব্য করতে শোনা যায় মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকুরকেও।
এ প্রসঙ্গে বিজেপি সরকারকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, মহারাষ্ট্রকে ‘বদনাম’ করার জন্যই ওই ঘটনাকে চর্চার কেন্দ্রে রাখা হচ্ছে। তিনিও টেনেছিলে গুজরাট প্রসঙ্গ। বলেন, ‘মহারাষ্ট্র থেকেই কি শুধুমাত্র মাদক উদ্ধার হয়? মুন্দ্রা বন্দর থেকেও তো কোটি টাকার মাদক উদ্ধার হয়েছে। মুন্দ্রা বন্দর কোথায়? সেটা সবাই ভুলে যাচ্ছেন। ‘NCB-কে কটাক্ষ করে ঠাকুরের মন্তব্য, ‘আপনাদের এজেন্সিগুলো আমাদের রাজ্য থেকে সামান্য গাঁজা খুঁজে পেয়েছে। আর আমাদের পুলিশ ১৫০ কোটি টাকার মাদক দ্রব্য উদ্ধার করেছে।’