কুমিল্লার নানুয়ার দিঘিরপাড়ে পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন রাখার ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত ইকবাল হোসেনকে নিয়ে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। এসময় ইকবালের দেওয়া তথ্যে মণ্ডপ থেকে নিয়ে যাওয়া হনুমানের হাতের গদাটি উদ্ধার করা হয়।
রোববার (২৪ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১১টায় ইকবালকে সঙ্গে নিয়ে নগরের দারোগাবাড়ি মাজার সংলগ্ন জঙ্গল থেকে গদাটি উদ্ধার করা হয়।
কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) এম তানভীর আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এম তানভীর আহমেদ জানান, রিমান্ডে ইকবালের দেওয়া তথ্যে পুলিশ তাকে নিয়ে অভিযানে যায়। দারোগাবাড়ি মাজার সংলগ্ন এলাকার একটি জঙ্গল থেকে গদাটি উদ্ধার করা হয়।
এর আগে সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ইকবাল হোসেন গদাটি নিয়ে নানুয়াদিঘী পশ্চিমপাড় দিয়ে হেঁটে দারোগাবাড়ি মাজারের সড়কে ঢুকে পড়ে। এর প্রায় এক ঘণ্টা আগে তাকে মসজিদ থেকে একটি কোরআন নিয়ে বের হতে দেখা যায়।
শনিবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে কুমিল্লার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মিথিলা জাহান নিপার আদালতে ইকবালসহ চারজনকে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চায় পুলিশ। শুনানির শেষে আদালত তাদের প্রত্যেকের সাতদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গত ২১ অক্টোবর রাত সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত এলাকার সুগন্ধা পয়েন্ট থেকে ইকবালকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরদিন ২২ অক্টোবর দুপুরে তাকে কুমিল্লা পুলিশ লাইনে আনা হয়। সেখানে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ইকবাল কোরআন রাখার কথা স্বীকার করে।
জানা গেছে, কুমিল্লা মহানগরের নানুয়ার দিঘিরপাড় পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন পাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ১৩ অক্টোবর মন্দিরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার কোতয়ালি মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হারুন অর রশীদ বাদী হয়ে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও কোরআন অবমাননার অপরাধে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেন।
অন্যদিকে, পূজামণ্ডপ ভাঙচুরের ঘটনায় কুমিল্লার বিভিন্ন থানায় এ পর্যন্ত নয়টি মামলা করা হয়েছে। এরমধ্যে কোতোয়ালী মডেল থানায় পাঁচটি, কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানায় দুটি এবং দাউদকান্দি ও দেবীদ্বার থানায় একটি করে মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ৭৯১ জনকে আসামি করা হয়।
এরমধ্যে ৯১ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এছাড়া ৭০০ অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করা হয়। এসব মামলায় এ পর্যন্ত ৪৮ জনকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।