বরিশালে আজ বুধবার শুরু হচ্ছে ভারতীয় উপমহাদেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় দীপাবলি উৎসব। এ উপলক্ষে কয়েক দিন ধরে নগরীর কাউনিয়া মহাশ্মশানে চলছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন এবং ধোয়া-মোছার কাজ। উৎসবের শৃঙ্খলা রক্ষায় আয়োজক কমিটির শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক নিয়োজিত থাকবে। উৎসব নির্বিঘ্ন করতে পুলিশ প্রশাসনও নিয়েছে নানা পদক্ষেপ।
সিসিটিভি ক্যামেরার নজরে থাকবে পুরো এলাকা। উৎসব এলাকার পরিবেশ-পরিস্থিতি শান্ত ও পূণ্যার্থীদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান নির্বিঘ্নে পালনের নিরাপত্তা দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবে পুলিশ (বিএমপি)। পাশাপাশি টহলে থাকবে র্যাপিড অ্যকশন ব্যাটালিয়ান (র্যাব) ও শতাধিক স্বেচ্ছাসেবী। এ ছাড়া এনএসআই ও সিটিএসবিসহ গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল পুরো এলাকার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবে।
বরিশাল মহাশ্মশান রক্ষা কমিটির সভাপতি মানিক মুখার্জী কুণ্ডু জানান, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস কালি পূজার আগের দিন ভূত চতুর্দশী তিথিতে পূজা অর্চনা করলে প্রয়াত ব্যক্তির আত্মা শান্তি লাভ করে। তাই আত্মার শান্তি কামনার পাশাপাশি প্রয়াত প্রিয়জনের উদ্দেশে তার সমাধিস্থলে নিবেদন করা হয় প্রয়াতের পছন্দের নানা ধরনের খাবার। সবকিছু করা হয় তিথি থাকা অবস্থায়। এ ছাড়া সমাধির পাশে মোমবাতি প্রজ্বালন করে প্রয়াতের আত্মার শান্তি কামনা করেন স্বজনরা।
তিনি আরও জানান, প্রতি বছর দেশ-বিদেশের স্বজনহারা মানুষ বরিশাল মহাশ্মশানে এসে প্রয়াত স্বজনদের আত্মার শান্তি কামনা করেন। মহাশ্মশান রক্ষা কমিটির নেতৃবৃন্দের আশা, এতে লক্ষাধিক লোকের সমাগম হবে বরিশাল মহাশ্মশানে।
মহাশ্মশান রক্ষা কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি গোপাল সরকার বলেন, পাঁচ একর ৯৬ শতাংশ মহাশ্মশানের পুরনো শ্মশানের অধিকাংশ সমাধি ধ্বংস হয়ে গেলেও এখনও সেখানে ব্রাহ্মণদের ২-৩টি এবং কবি জীবনানন্দ দাশের বাবা সত্যানন্দ দাশ ও পিতামহ সর্বানন্দ দাশ, ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের অগ্নিপুরুষ বিপ্লবী দেবেন ঘোষ, ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের নেত্রী মনোরমা মাসি মা, শিক্ষাবিদ কালি চন্দ্র ঘোষসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের সমাধি রয়েছে।
নতুন-পুরনো মিলিয়ে মহাশ্মশানে ৭০ হাজারেরও বেশি সমাধি আছে। এর মধ্যে ৫৮ হাজার পাকা, ১২ হাজার কাঁচা মঠ এবং ৮শ মঠ রয়েছে যাদের স্বজন এই দেশে নেই। সেইসব মঠগুলো হলুদ রঙ করা হয়েছে। এসব মঠে কমিটির পক্ষ থেকে মোমবাতি প্রজ্বালন করা হবে।
১৯২৭ সাল থেকে ওই স্থানে শ্মশান দীপাবলি উৎসব পালিত হয়ে আসছে। আজ সন্ধ্যা ৭টায় তিথি শুরু হয়ে শেষ হবে বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) সকাল ৭টায়। এর মধ্যে মৃত ব্যক্তির আত্মার শান্তি কামনায় পূজা অর্চনা করা হবে।