অতিমাত্রায় তাপমাত্রা বৃদ্ধিই বর্তমান বিশ্বের প্রধান সমস্যা। এর ফলে ব্যাপকভাবে বেড়েছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ। মাত্রাতিরিক্ত কার্বন নিঃসরণের কারণে এটা ঘটছে। তবে, তাপমাত্রা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে বেঁধে রাখতে না পারলে ২৫০০ সালের মধ্যে বিশ্ব হবে বসবাসের অযোগ্য।
শুক্রবার (৫ নভেম্বর) স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে (কপ-২৬) ‘জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা সম্পর্কে বিশ্ববাসীকে অবহিত করা হয়।
সম্মেলনে বিশ্বের তাপমাত্রা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে বেধে রাখতে বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। ১ দশকিম ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে না রাখলে পৃথিবীতে বাস করা যাবে না। অতিরিক্ত তাপের কারণে বিশ্ব হবে ভিনগ্রহ।
এসময় কপ২৬-এর প্রেসিডেন্ট অলোক শর্মা, ভাইস প্রেসিডেন্ট আল গো, এবং জাতিসংঘের উচ্চ-স্তরের জলবায়ু বিশেষজ্ঞ নাইজেল টপিংসহ , অর্থনীতি এবং সুশীল সমাজের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সম্মেলনে দ্রুত সময়ের মধ্যে শূন্য-কার্বন নিঃসরণ করা যায় সেই বিষয়েও আলোচনা হয়।
রাষ্ট্রগুলো কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমনের পরিমাণ কমানোর যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তা পুরোপুরি পালন করা হলে ২১০০ সালে গড় তাপমাত্রা ২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে ঝড়, ঘূর্ণিঝড়, খরা, বন্যা, তাপপ্রবাহ ও শৈত্যপ্রবাহের তীব্রতা ও সংখ্যা বেড়ে যাবে। তাই এখনই সতর্ক না হলে আগামী ২৫০০ সালের মধ্যে বিশ্ব আর বাসযোগ্য থাকবে না। এটি হবে অন্য একটি ভিনগ্রহ।
বিশ্বের কার্বন নিঃসরণ ২০৩০ সালের মধ্যে অর্ধেকে নামিয়ে আনতে হবে, যেন বৈশ্বিক উত্তাপকে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখা যায়। এই বিষয়ে দেশগুলো ২০১৫ সালের প্যারিস চুক্তিতে সম্মত হয়েছিল। তাপমাত্রা বাড়ার কারণে বাড়ছে নানা রোগ, ধ্বংস হচ্ছে প্রাণিকুল।
অন্যদিকে, জলবায়ুর কারণে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে ১০০ বিলিয়ন ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও অধরায়। অথচ বিশ্বের মোট কার্বন নিঃসরণের মধ্যে চীন ২৯ দশমিক ১৮ শতাংশ, যুক্তরাষ্ট্র ১৪ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ, ভারত ৭ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ, রাশিয়া ৪ দশমিক ৬৫ শতাংশ, জাপান ৩ দশমিক ৪৭ শতাংশ, ইইউ প্রায় ৯ শতাংশ। বাংলাদেশের অবদান মাত্র শূন্য দশমিক ২১ শতাংশ। ধনী দেশগুলোর বেশি কার্বন নিঃসরণ করছে অথচ মধ্যম ও নিম্ন আয়ের দেশগুলো ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
কার্বন নিঃসরণ কীভাবে কমানো যাবে তার একটা রোডম্যাপও দেওয়া হয়েছে। ২০৪০ সালের মধ্যে শূন্য কার্বন অর্থনীতিতে চলে যাওয়ার অঙ্গীকার করা হয়েছে। প্রবৃদ্ধির ২৫ শতাংশ কার্বন শূন্য অর্থনীতিতে চলে যাবে।