পরিবহন ধর্মঘট : আজও সারাদেশে ভোগান্তিতে যাত্রীরা

বিশেষ প্রতিনিধি

পরিবহনশূন্য রাজধানীর সড়ক
ফাইল ছবি

ডিজেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় দেশে অঘোষিত পরিবহন ধর্মঘট চলছে শুক্রবার সকাল থেকে। বৃহস্পতিবার পরিবহন খাতের মালিক-শ্রমিকদের একাধিক সংগঠন যাত্রী-পণ্যবাহী যান বন্ধ রাখার পক্ষে অবস্থান নেয়।

পরিবহন ধর্মঘটে শুক্রবার কার্যত পুরো দেশ থমকে যায়। হাজারো ভোগান্তি মাথায় চেপে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাতায়াত করেন যাত্রীরা। সড়কে রিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য ছোট যানের ভাড়া বেড়ে যায় কয়েকগুণ। যানবাহন না পেয়ে অনেকে হেঁটেই গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দেন।

universel cardiac hospital

বুধবার ডিজেলের নতুন দাম ঘোষণার পরদিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবার মালিকরা সাফ জানিয়ে দেন, অতিরিক্ত দামে ডিজেল কিনে পরিবহন চালানো সম্ভব নয়। সেক্ষেত্রে তারা পরিবহনের ভাড়া বাড়ানোর প্রস্তাব দেন। মালিকদের সঙ্গে একমত হন শ্রমিক নেতারা।

ডিজেলের বাড়ানো দামের সঙ্গে বাসভাড়া সমন্বয়ের বিষয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) বরাবর চিঠি দেওয়া হয়। বিষয়টি নিয়ে শুরুতে কোনো সাড়া দেয়নি বিআরটিএ। যদিও বৃহস্পতিবার সারাদিন ধরেই পরিবহন বন্ধ রাখা নিয়ে আলোচনা চলছিল মালিকপক্ষের মধ্যে। গণমাধ্যমেও এ সংক্রান্ত বিভিন্ন সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছিল।

সারাদিনের আলোচনা ও দুপুরের চিঠির পর রাত আটটার দিকে মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের বিআরটিএর পক্ষ থেকে জানানো হয়, রোববার বেলা ১১টায় ভাড়া সমন্বয় সংক্রান্ত সভা হবে। সভাটি হবে বিআরটিএ সদর কার্যালয়ে। শুক্রবার ও শনিবার সাপ্তাহিক সরকারি ছুটি থাকায় সভাটি রোববার ডাকা হয়েছে বলে জানা গেছে। এর মধ্যে শুক্রবার সারাদিন ভোগান্তিতে ছিলেন সাধারণ যাত্রীরা। অর্থাৎ কোনো সমাধান না এলে শনিবারও তাদের দুর্ভোগের মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে।

বিআরটিএর দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা শুক্র ও শনিবারের সাপ্তাহিক ছুটি কাটানোর পর রোববার সমস্যা সমাধানের জন্য সভায় বসবেন। বিআরটিএ চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট সব অংশীজনের মত নিয়েই রোববারের সভা ডাকা হয়েছে। সময় পরিবর্তনের কোনো সুযোগ নেই।

সংশ্লিষ্ট ও সচেতনরা বলছেন, উদ্ভূত সমস্যার জরুরি সমাধানে দায়িত্বশীলদের উদ্যোগের অভাবে সড়কে পরিবহন ধর্মঘটের পরিস্থিতি দীর্ঘায়িত হচ্ছে। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, দ্রুত এ সমস্যা সমাধান করা উচিত ছিল।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত সিদ্ধান্ত না নেওয়ায় উদ্ভূত পরিস্থিতির সমাধান হচ্ছে না। শনিবারও সারাদেশে বাস ও পণ্যবাহী যান চলাচল বন্ধ থাকবে। সাধারণ মানুষকে তার খেসারত দিতে হবে। রোববার সমস্যার সমাধান হলে সারাদেশে গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

শেয়ার করুন