ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি)-সহ স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নাম রেজুলেশনসহ কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সর্বশেষ স্থানীয় সরকার পরিষদ মনোনয়ন বোর্ডের সভায় তিনি এই নির্দেশ দেন।
এদিকে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নামের তালিকা কেন্দ্রে পাঠানোর বিষয়টি আগে এককভাবে জেলা আওয়ামী লীগের ওপর অর্পণ করা ছিল। সেই প্রক্রিয়াও আনা হয়েছে পরিবর্তন। দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নাম পাঠাবে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ, উপজেলা চেয়ারম্যান মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নাম পাঠাবে উপজেলা আওয়ামী লীগ। আর পৌর মেয়র মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নাম পাঠাবে পৌর আওয়ামী লীগ। সংশ্লিষ্ট ইউনিটগুলো রেজুলেশন নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের কাছে হস্তান্তর করার পর তারা ওই প্রস্তাবনা কেন্দ্রে পাঠাবে।
মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নাম পাঠানো নিয়ে বিভিন্ন অভিযোগ আসার পরিপ্রেক্ষিতে এই পদ্ধতি অনুসরণ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ তথ্য জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর এক সদস্য বলেন, মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নাম কেন্দ্রে পাঠাতে রেজুলেশন বাধ্যতামূলক করা হলেও দেখা যায় অনেক জেলা তা মানছে না। এ নিয়ে স্থানীয় সরকার নির্বাচন মনোনয়ন বোর্ডের সভায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈঠকে তিনি প্রশ্ন রেখেছেন, ‘রেজুলেশন করে নাম প্রস্তাব করে না কেন তৃণমূল নেতারা?’
শেখ হাসিনার উদ্ধৃতি দিয়ে সভাপতিমণ্ডলীর অপর এক সদস্য বলেন, নেত্রী (শেখ হাসিনা) নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূল থেকে কেন্দ্রে নাম প্রস্তাব হতে হবে রেজুলেশন আকারে। ওই নেতাদের ভাষ্যমতে- প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, উপজেলা চেয়ারম্যান মনোনয়ন প্রত্যাশীর নাম উপজেলা আওয়ামী লীগ, পৌরসভার মেয়র প্রত্যাশীর নাম পৌর আওয়ামী লীগ ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মনোনয়ন প্রত্যাশীর নাম পাঠাবে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ। তবে অবশ্যই তা রেজুলেশনসহ হতে হবে। তিনি বলেছেন, ধানমন্ডি কার্যালয়ে যখন মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নাম জমা হয় তখন যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করা হয়েছে কিনা ভালোভাবে যাচাই-বাছাই করা উচিত।
এসময় সভাপতিমণ্ডলীর অপর এক সদস্য কেন্দ্রে মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থীদের নাম পাঠানোর ক্ষেত্রে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ আসছে জেলার দায়িত্বশীল নেতাদের বিরুদ্ধে জানালে জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হলে অভিযোগ থাকবে না।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্যাহ বলেন, বোর্ডের সভায় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের রেজুলেশনসহ নামের প্রস্তাব দেখলে নেত্রী (শেখ হাসিনা) সবাইকে পড়ে শোনান। উনি ভালো-মন্দ মন্তব্যও করেন। আবার রেজুলেশন ছাড়া নাম দেখে অসন্তোষও দেখান। মনোনয়ন বোর্ডের সর্বশেষ সভায় স্থানীয় নির্বাচন নিয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে।
এদিকে সারাদেশে প্রায় চার হাজার ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন চলমান রয়েছে। এরইমধ্যে তিন ধাপে প্রায় আড়াই হাজার ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, সামনে যেসব নির্বাচন রয়েছে তাতে সর্বশেষ বোর্ড সভায় যেসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তা বাস্তবায়ন করা হবে।