ডিজেলের দামের সাথে সমন্বয় করে বাস ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ-বিআরটিএ। দূরপাল্লার বাস ভাড়া প্রতি কিলোমিটারে দুই টাকা, মহানগরে দুই টাকা ৪০ পয়সা করার প্রস্তাব দিয়েছে মালিক পক্ষ। সে হিসেবে দূরপাল্লা ও মহানগরে ৪০ শতাংশেরও বেশি ভাড়া বেশি নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য এই প্রস্তাবটি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে বিআরটিএ।
রোববার বাস মালিকদের সঙ্গে বিআরটিএর কয়েক ঘণ্টার বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়। বেলা সাড়ে ১১টার পর রাজধানীর বিআরটিএ ভবনে এই বৈঠক শুরু হয়। শেষ হয় বিকাল চারটার দিকে।
বৈঠকের কার্যপত্রে বলা হয়, বিআরটিএ কর্তৃক সবশেষ ব্যয় বিশ্লেষণ অনুযায়ী ভাড়া হতে পারে দূরপাল্লা ও মহানগরী এলাকায় যথাক্রমে ১.৮২ ও ২.১০ টাকা। বর্তমান বাস ভাড়ার সঙ্গে ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির হার (২৩.০৮%) সমন্বয় করে বাস ভাড়া পুনর্নির্ধারণের বিষয়টি আলোচনা হতে পারে।
বর্তমানে দূরপাল্লায় কিলোমিটার প্রতি এক টাকা ৪২ ও মহানগরে এক টাকা ৭০ পয়সা করে ভাড়া নির্ধারণ করা আছে।
অন্যদিকে বৈঠকে আলোচ্যসূচিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব কর্তৃক ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীসহ দূরপাল্লার রুটে ছয় থেকে সাত বছর ধরে বাস ভাড়া বাড়ানো হয়নি। করোনাকালেও তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সম্প্রতি ডিজেলের দাম লিটারপ্রতি ১৫ টাকা বাড়ানোয় গত ৪ নভেম্বর বাস ভাড়া বাড়াতে আবেদন করা হয়। সেই আবেদন বিবেচনায় নিয়ে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে এ বৈঠক আয়োজন হয়েছে।
বিআরটিএ চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদারের সভাপতিত্বে এ বৈঠকে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ, বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহসাধারণ সম্পাদক রাকেশ ঘোষ, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনসহ সরকারি-বেসরকারি সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
সরকার ডিজেলের দাম ২৩ শতাংশ বাড়ানোর পর শুক্রবার সকাল থেকে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের ধর্মঘট শুরু হয়। তখন থেকেই নগরপরিবহন ও দূরপাল্লার বাসের পাশাপাশি পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে তিন দিন ধরে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
সবশেষ ২০১৫ সালে নগর পরিবহনে বাসের ভাড়া প্রতি কিলেমিটারে এক টাকা ৭০ পয়সা এবং মিনিবাসের জন্য এক টাকা ৬০ পয়সা নির্ধারণ করে দেয় সরকার। আর ২০১৬ সালে দূরপাল্লায় ডিজেলচালিত বাস ও মিনিবাসের ভাড়া নির্ধারণ করা হয় এক টাকা ৪২ পয়সা।