বাংলাদেশের বহু মানুষ করোনা মহামারিতে অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু হয়ে গেছে। অনেক মানুষ তাদের ব্যবসায় ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে দরিদ্র হয়ে গেছে। সাধারণ মানুষের ক্রয়সক্ষমতা কমেছে। এমন এক পরিস্থিতির মধ্যে নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতি পরিস্থিতি আরও নাজুক করে তুলেছে। সাধারণ মানুষ তাদের ব্যয় বহন করতে প্রতিনিয়ত হিমশিম খাচ্ছে। ঠিক এমনই এক ক্ষণে ডিজেল এবং কেরোসিনের দাম বাড়ানো হলো। একইভাবে এলপি গ্যাসের দামও বাড়ানো হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এবং আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করতে এ দাম বাড়ানো হয়েছে। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন লিকুইফাইড পেট্রোলিয়াম গ্যাস বা এলপিজির দাম সিলিন্ডারপ্রতি ৫৪ টাকা বাড়িয়েছে। কমিশন থেকে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারে বিশেষ করে সৌদি আরবে দাম বৃদ্ধির কারণে সব ধরনের গ্যাসের দাম সমন্বয় করা হয়েছে।
করোনা মহামারির কারণে বিশ্ব অর্থনীতি যেমন থমকে গিয়েছিল, একইভাবে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের আয়ের ওপর এর ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। বহু মানুষ কাজ হারিয়েছেন, অনেকে আবার ব্যবসায় লোকসান গুনেছেন। এর ফলে আয় কমে গেছে দেশের বড় একটি অংশের মানুষের। এমতাবস্থায় জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির ক্ষেত্রে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের গণশুনানির যে আইনি ব্যবস্থা রয়েছে, সেটি অনুসরণ করা উচিত ছিল বলে মনে করি। যা হোক, নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতির এই পরিস্থিতির মধ্যে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি যেন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা।
বাংলাদেশ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের মানুষের কঠোর পরিশ্রমে আর সঠিক নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের এক রোল মডেল। কিন্তু সাধারণ মানুষের কষ্টগুলো সম্পর্কে সবার আগে ভাবতে হবে। তেলের দাম বৃদ্ধির ফলে পরিবহণ ব্যয় বেড়েছে, পণ্যের দাম বাড়ছে এবং উৎপাদন ব্যয়ও বেড়ে যাবে। ফলে পণ্যের ব্যয় বৃদ্ধিসহ মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়ছে। ভোক্তার ক্রয়ক্ষমতা ব্যাপক চাপে পড়ছে। যা দেশের অর্থনীতির ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে।
লেখক : কবি ও প্রাবন্ধিক