সংসদীয় রীতিনীতি সংস্কারে হুমায়ূন রশীদ স্মরণীয় হয়ে থাকবেন : প্রধানমন্ত্রী

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

জাতীয় সংসদের প্রচলিত রীতিনীতির আধুনিকায়ন এবং সংস্কারে সাবেক স্পিকার প্রয়াত হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সাবেক স্পিকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর ৯৩তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে এক বাণীতে তিনি এ কথা বলেন।

universel cardiac hospital

বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন কূটনীতিবিদ ও জাতীয় সংসদের সাবেক স্পিকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর ৯৩তম জন্মজয়ন্তীতে তার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের মহান স্বাধীনতার ইতিহাসে বীর মুক্তিযোদ্ধা হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী এক উজ্জ্বল নক্ষত্রের নাম। তিনি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে ১৯৭১ সালের মার্চ মাসে বাঙালির পক্ষে কূটনৈতিক যুদ্ধের মানসিক প্রস্তুুতি গ্রহণ করেন।

তিনি বলেন, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর নয়াদিল্লির পাকিস্তানি দূতাবাসে কর্মরত অবস্থায় হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী পাকিস্তানের পক্ষ ত্যাগ করেন। এ সময় দূতাবাসে কর্মরত বাঙালিদের জীবন রক্ষায় হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। তিনি তখন বিদেশি গণমাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং বন্দি নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তির জন্য জোরালো আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুদ্ধজয়ের পর বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের স্বীকৃতি আদায়ে কূটনৈতিক তৎপরতা শুরু করেন। তার বিচক্ষণতায় ৩৪টি দেশ স্বল্প সময়ে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়।

তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতার নির্মম হত্যাকাণ্ডের খবর পেয়ে হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী আমাকে এবং আমার বোন শেখ রেহানাকে বেলজিয়াম থেকে তৎকালীন পশ্চিম জার্মানিতে আনার ব্যবস্থা করেন। আমাদের চরম দুঃসময়ে তিনি এবং তার সহধর্মিনী মেহজাবিন চৌধুরী পরম মমতায় আমাদের দুই বোনকে আগলে রাখেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সে সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্ধিরা গান্ধীর সঙ্গে যোগাযোগ করে হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী দিল্লিতে আমাদের রাজনৈতিক আশ্রয়ের ব্যবস্থা করেন। অকুতোভয় এই কূটনীতিবিদকে সেজন্য ষড়যন্ত্রকারীদের রোষাণলে পড়তে হয় এবং তিনি (চৌধুরী) বিভিন্নভাবে নির্যাতিত হন।

তিনি বলেন, দীর্ঘ ২১ বছর পর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে সরকার গঠন করলে হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীকে স্পিকারের দায়িত্ব দেওয়া হয়। জাতীয় সংসদকে গতিশীল এবং জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী সর্বদা সচেষ্ট ছিলেন। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ২০১৮ সালে মরহুম রশীদ চৌধুরীকে মরণোত্তর স্বাধীনতা পদক দেওয়া হয়।

শেখ হাসিনা বলেন, আমার প্রত্যাশা, স্পিকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী স্মৃতি পরিষদের নেতারা বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মরহুমের অবদান জাতির সামনে উপস্থাপন এবং নতুন প্রজন্মকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করবেন।

সাবেক স্পিকার মরহুম হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী।

শেয়ার করুন