বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের ৪৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা যুবলীগের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার বিকেলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় আলোচনা সভা ও সম্প্রীতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বিকেল সাড়ে ৪টায় স্থানীয় শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষা চত্ত্বরে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মোকতাদির চৌধুরী এমপি বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট নৃশংসভাবে যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শেখ ফজলুল হক মনিকে হত্যা করা হয়েছিল।
তিনি বলেন, মুজিব বাহিনী গঠন করার জন্য বঙ্গবন্ধু যে ৪ জনকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন তার মধ্যে প্রধানতম একজন ছিলেন শেখ ফজলুল হক মনি। তিনি শুধু বক্তৃতা দিতেন না, তিনি মুজিব বাহিনীর হয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে স্বশরীরে অংশ গ্রহণ করেছিলেন। পার্বত্য চট্টগ্রামের ভেতর দিয়ে তিনি তার বাহিনী নিয়ে জেনারেল সুজন সিং ওভাংসহ বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা করে ছিলেন।
মোকতাদির চৌধুরী বলেন, শেখ ফজলুল হক মনি একজন আধুনিক বিজ্ঞানমনস্ক মানুষ ছিলেন। তাঁর নিজস্ব একটা দর্শন ছিল; যদিও আজকে আমরা দর্শনের ধারে-কাছে থাকি না। তিনি বলতেন মোনায়েম খানের আমলা দিয়ে শেখ মুজিবের সোনার বাংলা গড়া যাবে না। এসময় তিনি আধুনিক বিজ্ঞান মনস্ক মানুষ ছাড়া পশ্চাৎগামী কেউ যেন যুবলীগে স্থান না পায় সেদিকে খেয়াল রাখান জন্য আহবান জানান।
হেফাজ নেতাদের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, এখানের অনেকেই বিভিন্ন জায়গায় বলে বেড়ান, অমুকের সময়ে, তমুকের সময়ে আমরা ভালো ছিলাম, তাদের সাথে আমাদের ভালো সম্পর্ক ছিলো, এখনের এমপির সাথে আমাদের ভালো সম্পর্ক নেই। আমি তাদেরকে বলতে চাই- আপনারা কি তাদের সময়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশন, পৌরসভা, ভূমি অফিসসহ সরকারি স্থাপনা পুড়িয়ে ছিলেন? আপনারা ২০১৬ সালে ও ২০২১ সালে দুই দুইবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তান্ডব চালিয়েছেন। এসব অপকর্মে জন্য একবারও কী ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসীর নিকট ক্ষমা চেয়েছেন? চাননি, তাহলে আপনাদের সাথে সম্পর্ক ভালো থাকবে কীভাবে? আপনারা যদি সমগ্র ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসীর কাছে আপনাদের দুষ্কর্মে জন্য ক্ষমা চান তাহলে আমার সাথেও আপনাদের সম্পর্ক ভালো হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, আনেককেই তো অতীতে টাকা পয়সা দিয়ে সাহায্য করেছি। তারপরেও আপনাদের মন যোগায়তে পারি নাই। আমার বয়সের শেষ, এখন আার আপনাদের মন যোগায়া চলতে পারব না।
মোকতাদির চৌধুরী বলেন, আগামী ১৩ তারিখ (শনিবার) এই রেলস্টেশন আবার চালু করা হবে, দীর্ঘ ৮ মাস যাদের অপকর্মের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জনসাধারণ কষ্ট করেছেন তাদের উদ্দেশ্যে আপনারা সকলে রেলস্টেশনে উপস্থিত থেকে থুতু নিক্ষেপ করবেন। । ঐদিন আমাদের রেলমন্ত্রী কমলাপুর থেকে যুক্ত হবেন এবং আমরা এখান থেকে যুক্ত হয়ে ওনার কার্যক্রমকে স্বগত জানাব। এসময় ঐ অনুষ্ঠানে যুক্ত হতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সর্বসাধারণকে আমন্ত্রন জানান তিনি।
জেলা যুবলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট শাহানুর ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম ফেরদৌসের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল-মামুন সরকার, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি তাজ মোহাম্মদ ইয়াছিন, মুজিবুর রহমান বাবুল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু, গোলাম মহিউদ্দিন খাঁন খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহবুবুল আলম খোকন, শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী মুসলিম মিয়া প্রমুখ।