‘অনলাইন জুয়ায় এক জেলায় দিনে লেনদেন ৫ কোটি টাকা’

নিজস্ব প্রতিবেদক

অনলাইন জুয়ার নামে দেশের একটি জেলাতেই দিনে অন্তত ৩ থেকে ৫ কোটি টাকা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে অবৈধভাবে লেনদেনের তথ্য পেয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

আজ রোববার দুপুরে সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি কামরুল আহসান এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।

universel cardiac hospital

সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির পক্ষ থেকে বলা হয়, চুয়াডাঙ্গা জেলায় ৫০ জন মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্টের তথ্য পাওয়া গেছে, যে নম্বরগুলো থেকে অনলাইন জুয়ার টাকা লেনদেন হচ্ছে। এই নম্বরগুলোর মধ্যে অন্তত ১৫টিতে দিনে ১০ লাখের ওপরে টাকা লেনদেন করছে জুয়াড়ি চক্র। পরে এই টাকা হুন্ডি বা অবৈধ ব্যাংকিং চ্যানেলে পাচার হচ্ছে বলে ধারণা সিআইডির।

কামরুল আহসান বলেন, আমরা একটি মামলার তদন্ত করতে গিয়ে একটি বেটিং সাইটের সন্ধান পাই। সাইটটি রাশিয়া থেকে পরিচালিত হলেও বাংলাদেশে তার এজেন্ট রয়েছে। সীমান্তবর্তী জেলায় অনলাইন জুয়ার টাকা লেনদেনের বেশি তথ্য আমরা পাচ্ছি। যেমন চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও কক্সবাজার।

সিআইডি জানায়, অনলাইন জুয়ার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গতকাল শনিবার চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও কক্সবাজার থেকে ৯ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁরা হলেন স্বপন মাহমুদ, নাজমুল হক, আসলাম উদ্দিন, মুরশিদ লিপু, শিশির মোল্লা, মো. সাদিক, মাসুদ রানা, মাহফুজুর রহমান ও তাঁর স্ত্রী মনিরা আক্তার। তাঁদের বয়স ৩৫ থেকে ২০ বছরের মধ্যে।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে কামরুল আহসান বলেন, একটি জেলায় ৫০ জন এজেন্টের তথ্য পাওয়া গেছে। সারাদেশের চিত্র এখনো আমরা পাইনি। এ নিয়ে কাজ চলছে। দিনে একটি বেটিং সাইটে এক থেকে দেড় লাখ ব্যক্তি জুয়ায় অংশ নেন।

সিআইডি জানায়, চক্রটি বিভিন্ন বড় লিগ টার্গেট করে অনলাইন জুয়ার আয়োজন করে। বেটিং সাইট বা অ্যাপসে যে কেউ লগিং অ্যাকাউন্ট খোলার পর একটি ই-ওয়ালেট পান। সেটিতে অ্যাকাউন্ট ওপেনকারী ব্যক্তিকে টাকা রিচার্জ করতে হয়। বেটিং সাইটে দেওয়া মোবাইল ব্যাংকিংয়ের নম্বরে টাকা পাঠানোর পর এই ই-ওয়ালেটে টাকা যুক্ত হয়। ন্যূনতম ১ হাজার টাকা ই-ওয়ালেটে প্রবেশ করাতে হয়। এরপর অ্যাকাউন্ট হোল্ডারকে পাসওয়ার্ড দেওয়া হয়। সেই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে ব্যক্তি জুয়া খেলেন।

সিআইডি সূত্র জানায়, বিজনেস সিম বরাদ্দ দেওয়ার ক্ষেত্রে ট্রেড লাইসেন্স থাকার কথা। কিন্তু জুয়ার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা কোনো রকম শর্ত না মেনে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের বিজনেস সিম পেয়ে যাচ্ছে। এমনকি বিজনেস সিম ভাড়াও নিচ্ছে চক্রটি। মোবাইল ব্যাংকিংয়ে কর্মরত অসাধু ব্যক্তিরা এই কাজে জড়িত থাকতে পারে বলে মনে করছে সিআইডি।

শেয়ার করুন