এসএসসি পরীক্ষায় বসছে সোয়া ২২ লাখ শিক্ষার্থী

নিজস্ব প্রতিবেদক

এসএসসি পরীক্ষা
ফাইল ছবি

করোনা মহামারি কাটিয়ে এবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। আজ রোববার (১৪ নভেম্বর) সারাদেশে একযোগে এসএসসি, দাখিল ও ভোকেশনাল পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে মোট ২২ লাখ ২৭ হাজার ১১৩ জন শিক্ষার্থী।

করোনা সংক্রমণের কারণে দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর বন্ধ থাকার পর গেল সেপ্টেম্বরে শুরু হয় শ্রেণিকক্ষে পাঠদান। আর এ কারণে সাধারণত বছরের শুরুর দিকে অনুষ্ঠিত হওয়া গুরুত্বপূর্ণ এই পাবলিক পরীক্ষাও দফায় দফায় পেছানো হয়। এমনকি গত বছরের এইচএসসি’র মতো পরীক্ষা না নিয়েই উত্তীর্ণ করে (অটো পাস) দেওয়াসহ নানা ধরনের প্রস্তাবনাও আসে। অবশেষে করোনা সংক্রমণ কমে আসায় বেশ কয়েক মাস দেরিতে হলেও পাবলিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

universel cardiac hospital

তবে দীর্ঘদিন শ্রেণি পাঠদান না হওয়ায় এবারের পরীক্ষা হচ্ছে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে। এবছর একজন শিক্ষার্থীকে নৈর্বাচনিক তিনটি বিষয়ের পরীক্ষা দিতে হবে। আবশ্যিক বিষয়ে পরীক্ষা এ বছর হচ্ছে না। সূচিতে প্রকাশিত বিষয়গুলোর মধ্যে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে তিনটি করে নৈর্বাচনিক বিষয়ে পরীক্ষা দিতে হবে।

পরীক্ষার সময়সূচি অনুযায়ী সকালের পরীক্ষা ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা এবং বিকালের পরীক্ষা বেলা ২টা থেকে সাড়ে ৩টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম দিন সকালে এসএসসি’র পদার্থ বিজ্ঞান (তত্ত্বীয়) অনুষ্ঠিত হবে। দাখিলের কোরআন মজিদ ও তাজভিদ সকালে এবং বিকালে দাখিলের পদার্থবিজ্ঞান (তত্ত্বীয়) পরীক্ষা হবে। আর কারিগরির (ভোকেশনাল) পদার্থবিজ্ঞান-২ (সৃজনশীল) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে সকালে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, মোট ২২ লাখ ২৭ হাজার ১১৩ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে এসএসসিতে ১৮ লাখ ৯৯৮ জন, দাখিলে ৩ লাখ ১ হাজার ৮৮৭ জন এবং ভোকেশনালে ১ লাখ ২৪ হাজার ২২৮ জন রয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবছর পরীক্ষার্থী বেড়েছে ১ লাখ ৭৯ হাজার ৩৩৪ জন। এবার প্রতিষ্ঠান বেড়েছে ১৫১টি এবং কেন্দ্র বেড়েছে ১৬৭টি। বৃদ্ধির হার ৮ দশমিক ৭৬ শতাংশ।

পরীক্ষার বিশেষ নির্দেশনায় জানানো হয়, কোভিড-১৯ অতিমারির কারণে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে কক্ষে গিয়ে আসন গ্রহণ করতে হবে। পরীক্ষার সময় এক ঘণ্টা ৩০ মিনিট। পরীক্ষা শেষে ৩০ দিনের মধ্যে ফল প্রকাশ করা হবে।

এ দিকে আজ সকালে মতিঝিল বয়েজ স্কুলে পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শনে যাবেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা এম এ খায়ের এ তথ্য জানিয়েছেন।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা

অনিবার্য কারণে কোনও পরীক্ষার্থী নির্ধারিত সময়ের পর পরীক্ষা কেন্দ্রে আসলে রেজিস্ট্রারে নাম, রোল নম্বর, প্রবেশের সময় ও বিলম্বের কারণ উল্লেখ করতে হবে। বিলম্বে আসা পরীক্ষার্থীদের তালিকা প্রতিদিন কেন্দ্র সচিব সংশ্লিষ্ট বোর্ডকে অবহিত করবেন।

কেন্দ্র সচিব ব্যতীত পরীক্ষা কেন্দ্রে অন্য কেউ মোবাইল ফোন বা মোবাইল ফোনের সুবিধাসহ ঘড়ি, কলম বা অননুমোদিত ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করতে পারবেন না। কেন্দ্র সচিব ছবি তোলা ও ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধাবিহীন একটি সাধারণ (ফিচার) ফোন ব্যবহার করতে পারবেন। অননুমোদিত ফোন, ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

পরীক্ষা চলাকালে এবং পরীক্ষা অনুষ্ঠানের আগে বা পরে পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষার্থী ও পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিরা ব্যতীত অন্যদের প্রবেশ সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ থাকবে। এ সময়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশকারী অননুমোদিত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

অনিবার্য কারণবশত কোনও পরীক্ষা বিলম্বে শুরু করতে হলে যত মিনিট পরে পরীক্ষা শুরু হবে, পরীক্ষার্থীদের সে সময় থেকে যথারীতি প্রশ্নপত্রে উল্লিখিত নির্ধারিত সময় দিতে হবে।

কোভিড-১৯ মহামারির কারণে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট সকলকে যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে পরীক্ষা অনুষ্ঠান নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য পরীক্ষার্থীর সঙ্গে একজনের বেশি অভিভাবক আসতে পারবেন না। তাছাড়া, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর থেকে গত ৫ সেপ্টেম্বর জারি করা গাইড লাইনের নির্দেশনা প্রতিপালন করতে হবে।

প্রশ্নপত্র ফাঁস কিংবা পরীক্ষার্থীদের কাছে উত্তর সরবরাহে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও জেলা প্রশাসন কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্নপত্র ফাঁস সংক্রান্ত গুজব কিংবা একাজে তৎপর চক্রগুলোর কার্যক্রমের বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো নজরদারি জোরদার করবে।

শেয়ার করুন