৩২০ কোটি টাকা আত্মসাৎ: পি কে হালদারসহ ২৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক

পিকে হালদার
ফাইল ছবি

ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড থেকে ৭টি কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে ৩২০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে কানাডায় পলাতক প্রশান্ত কুমার হালদারসহ (পি কে হালদার) ২৯ জনের বিরুদ্ধ মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক।

আজ রোবিবার (১৪ অক্টোবর) বিকালে সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান দুদক সচিব মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার।

universel cardiac hospital

মামলায় পি কে হালদার ছাড়াও আসামি করা হয়েছে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের সাবেক চেয়ারম্যান এম এ হাশেম, সাবেক এমডি মো. রাশেদুল হক, নয়জন বোর্ড মেম্বার, পি কে হালদারের আত্মীয় ও সহযোগীসহ ২৯ জনকে।

কাগুজে প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে জি অ্যান্ড জি এন্টারপ্রাইজের নামে ৩০ কোটি, তামিম অ্যান্ড তালহা ব্রাদার্স লিমিটেডের নামে ৩০ কোটি টাকা, গ্রিনলাইন ডেভেলমেন্ট লিমিটেডের নামে ৬০ কোটি টাকা, এমটিবি মেরিন লিমিটেডের নামে- ৬০ কোটি টাকা এবং পি অ্যান্ড এল ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের নামে ৫০ কোটি।

দুদক সচিব বলেন, ভিত্তিহীন সাতটি কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে ৩২০ কোটি টাকা ঋণ জালিয়াতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুদক সাতটি মামলার অনুমোদন করে। সেখান থেকে পাঁচটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। বাকি দুটি মামলা প্রক্রিয়াধীন।

সচিব বলেন, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এবং বোর্ডের সদস্যরা অসৎ উদ্দেশ্যে ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতারণার মাধ্যমে অপরাধমূলক বিশ্বাস ভঙ্গ করে ভুয়া ও কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে জাল রেকর্ডপত্রাদি প্রস্তুত করে তা সঠিক হিসেবে ব্যবহার করে অস্তিত্ববিহীন প্রতিষ্ঠানের মালিকদের ঋণ পেতে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করেন।

দুদক সচিব আরও বলেন, সংশ্লিষ্ট ঋণের বেনিফিসিয়ারিরা ইন্টারন্যাশনাল লিজিং থেকে ৩১৮ কোটি টাকা উঠিয়ে আত্মসাৎ করেন এবং পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন লেয়ারিংয়ের মাধ্যমে ওই অর্থ বিভিন্ন কোম্পানি ও ব্যক্তির হিসাবে স্থানান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে অবস্থান গোপন করে পাচার করেন।

তাদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি, ১৮৬০ এর ৪০৯, ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১, ১০৯ ও ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪ (২), (৩) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করায় দুর্নীতি দমন কমিশন পৃথক পৃথক সাতটি মামলার অনুমোদন দিয়েছে।

ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে এখন পর্যন্ত মোট ১৫টি মামলা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি থেকে আত্মসাৎকৃত মোট টাকার পরিমাণ এক হাজার ২০০ কোটি টাকা। আর অর্থ আত্মসাতে সংশ্লিষ্ট মোট ৩৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। আর তাদের মধ্যে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়েছেন ১১ জন। এছাড়া বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে ৬৯ জনের বিরুদ্ধে।

চলতি বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি পিকে হালদারের সহযোগীদের অর্থ লোপাটের বিষয়ে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের ৮৩ জন ব্যক্তির ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করা হয়। এর মধ্যে ৬২ জনের হিসাবে এক হাজার ৫৭ কোটি ৮০ লাখ টাকা ফ্রিজ করা হয়েছে।

শেয়ার করুন