করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধে রাজধানীর বিভিন্ন স্কুল-কলেজে চলছে টিকাদান কর্মসূচি। প্রতিদিন গড়ে ৪০ হাজার শিক্ষার্থীকে টিকা দেওয়ার সরকারি লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও বাস্তবে তা পূরণ হচ্ছে না। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে, গত ১ নভেম্বর থেকে ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত নির্ধারিত আটটি টিকাদান কেন্দ্রে মোট ২ লাখ ২৪ হাজার ৯২৭ জন শিক্ষার্থী টিকা নিয়েছেন। এতে প্রতিদিন গড়ে ১৩ হাজারের বেশি অর্থাৎ নির্ধারিত টার্গেটের এক তৃতীয়াংশ স্কুলশিক্ষার্থীকে টিকার আওতায় আনা সম্ভব হচ্ছে।
গত ১ নভেম্বর থেকে রাজধানীর আটটি স্কুলের কেন্দ্রে এ টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়। ওইদিন রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে শিক্ষার্থীদের প্রয়োগ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
জন্মনিবন্ধনসহ নানা জটিলতার কারণে ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের টিকাদান কার্যক্রমে ধীরগতি। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের জন্মনিবন্ধন কার্যালয়গুলোতে নতুন জন্মনিবন্ধন, নিবন্ধনে নাম ও বয়সে ভুল ইত্যাদি সমস্যা নিয়ে প্রতিদিন অসংখ্য শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা ধর্ণা দিচ্ছেন। ভুল সংশোধন করতে কারও কারও ঢাকার ডিসি অফিসেও দৌড়ঝাঁপ করতে হচ্ছে।
জানা গেছে, এ পর্যন্ত টিকাগ্রহীতা ২ লাখ ২৪ হাজার ৯২৭ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রথম ডোজ ২ লাখ ২৪ হাজার ৭৬৮ জন ও দ্বিতীয় ডোজের টিকা নিয়েছেন ১৫৯ জন। সর্বশেষ গত ২৪ ঘণ্টায় (১৭ সেপ্টেম্বর) টিকা নিয়েছেন ৪১ হাজার ২২১ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ছাত্র ১৯ হাজার ২১২ জন ও ছাত্রী ২২ হাজার ৯ জন। এসময়ে দ্বিতীয় ডোজের টিকাগ্রহীতা ৩ জনের মধ্যে ছাত্র ১ জন ও ছাত্রী ২ জন।
রাজধানীসহ সারাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার টিকা নিয়েছেন আরও ৭ লাখ ৩৪ হাজার ৮৫৯ জন। তাদের মধ্যে প্রথম ডোজের ৪ লাখ ৭৪ হাজার ৬৭৪ জন ও দ্বিতীয় ডোজের টিকা নিয়েছেন ২ লাখ ৬০ হাজার ১৮৫ জন।
প্রথম ডোজ টিকাগ্রহীতাদের মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ১৮ হাজার ৪২৭ জন ও নারী ২ লাখ ৫৬ হাজার ২৪৭ জন। দ্বিতীয় ডোজের টিকাগ্রহীতাদের মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ২৬ হাজার ৪২ জন ও নারী ১ লাখ ৩৪ হাজার ১৪৩ জন।
চলতি বছরের ২৭ জানুয়ারি দেশে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়। রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার মাধ্যমে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বর্তমানে দেশে অ্যাস্ট্রাজেনেকা ছাড়াও ফাইজার, সিনোফার্ম ও মর্ডানার টিকা দেওয়া হচ্ছে।
২৭ জানুয়ারি থেকে ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে টিকাগ্রহীতার সংখ্যা ৮ কোটি ৬৯ লাখ ৭৯ হাজার ৫০৩ জন। এর মধ্যে প্রথম ডোজের ৫ কোটি ২৯ লাখ ৮৩ হাজার ৫৫৫ জন ও দ্বিতীয় ডোজের টিকা নিয়েছেন ৩ কোটি ৩৯ লাখ ৯৫ হাজার ৯৪৮ জন।
১৭ নভেম্বর পর্যন্ত টিকার জন্য মোট নিবন্ধনকারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬ কোটি ৭৪ লাখ ৬১ হাজার ৪০৭ জন। এর মধ্যে জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে ৬ কোটি ৬৪ লাখ ৭৭ হাজার ২২ জন ও পাসপোর্টের মাধ্যমে ৯ লাখ ৮৪ হাজার ৩৮৫ জন নিবন্ধন করেছেন।