বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবিতে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে সারাদেশে সোমবার বিক্ষোভ সমাবেশ করবেন দলটির নেতাকর্মীরা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন।
আজ শনিবার বিকাল ৪টার দিকে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া মুক্তি ও বিদেশের উন্নত চিকিৎসার দাবিতে গণঅনশন শেষে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই কর্মসূচি ঘোষণা করে বলেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরে যাবো না।
এর আগে সকাল নয়টা থেকে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয়ভাবে করা গণঅনশনে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য দেন। অংশ নেন কয়েক হাজার নেতাকর্মী। যারা রাস্তার ওপরে মাদুর বিছিয়ে অনশন কর্মসূচি পালন করেন।
এই কর্মসূচিতে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের শরিকরা ছাড়াও বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের নেতারা সংহতি প্রকাশ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ারুল্লাহ চৌধুরী এই অনশন ভাঙান।
অনশন চলাকালে দেওয়া বক্তব্যে দলের নেতারা বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে নিয়ে তার সুচিকিৎসার দাবি আদায়ে ঘরোয়া কর্মসূচি থেকে বের হয়ে রাজপথে লাগাতার আন্দোলন কর্মসূচি দেওয়ার দাবি করেন।
হাইকমান্ডকে উদ্দেশ্য করে নেতারা বলেন, চেয়ারপারসনের মুক্তির জন্য আর কোনো নরম কর্মসূচি নয়, এখনই মাঠের লাগাতার কর্মসূচি দিতে হবে। জীবন দিয়ে হলেও তারা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করবেন।
অনশনে বিএনপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু বলেন, ‘শেখ হাসিনার সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরাতে না পারলে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি মিলবে না। তার চিকিৎসাও হবে না। তাই লাগাতার কর্মসূচি দিয়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে নামতে হবে। সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরাতে হবে। আমরা সব ধরনের কর্মসূচি বাস্তবায়নে রাজপথে থাকবো।’
জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুল বলেন, ‘কর্মসূচি গিয়ে ঘরে বসে থাকা যাবে না। মাঠে থাকতে হবে। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে না নামতে পারলে সরকারের কাছ থেকে দাবি আদায় করা যাবে না। চেয়ারপারসনও মুক্তি পাবেন না। লাগাতার কর্মসূচি দিন, আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি মাঠে থাকবো। জীবনের বিনিময় হলেও চেয়ারপারসনের মুক্তির আন্দোলন ত্বরান্বিত করবো।’
যুবদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া হাসপাতালে আর আমরা ঘরে বসে থাকতে পারি না। তার কিছু হলে আমরা যদি কিছু করতে না পারি তাহলে কারো রাজনীতি করার অধিকার থাকবে না। তার জন্য হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়। রাতে ঘুম হয় না। তাই সবাইকে বলবো প্রস্তুত হোন। নেতাদের বলবো আপনারা কর্মসূচি দিন। সরকারকে হটাতে আমরা মাঠে থাকার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি। রক্তের বিনিময়ে হলেও কর্মসূচিতে থাকবো৷’
দলের প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর সঞ্চালনায় গণঅনশনে অন্যদের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, যুবদলের সভাপতি সাইফুল ইসলাম নীরব, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল প্রমুখ বক্তব্য দেন।