অধিক মুনাফার লোভে বেপরোয়া ছিলেন সেই চালক ও হেলপার

রাজধানীর বদরুন্নেসা কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রী হাফ ভাড়া দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু চালকের সহকারী দাবি করেন পুরো ভাড়া। এটা নিয়ে বিতণ্ডার এক পর্যায়ে ওই ছাত্রীর সঙ্গে অশালীন আচরণ এবং তাকে হেনস্থা করেন হেলপার। মূলত বাস মালিকের সঙ্গে দৈনিক চুক্তির টাকা পরিশোধের পর অধিক মুনাফা ওঠানোর লোভেই বেপরোয়া ছিলেন চালক ও তার সহকারী। আর এ কারণেই হেলপার ওই ছাত্রীর সঙ্গে কুরুচিপূর্ণ ও আপত্তিকর কথাবার্তা বলেন।

রোববার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত ঠিকানা পরিবহনের একটি বাসের চালক মোহাম্মদ রুবেল ও তার সহকারী মো. মেহেদী হাসানকে আটক করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। রাতেই রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে এ ব্যাপারে ব্রিফ করেন র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

universel cardiac hospital

ঘটনার বিবরণে মঈন বলেন, হেনস্থার শিকার ভুক্তভোগী বদরুন্নেসার ওই শিক্ষার্থী কলেজের অধ্যক্ষ বরাবর একটি অভিযোগ করেন। অভিযোগ অনুযায়ী, শনিবার (২০ নভেম্বর) সকালে তিনি শনির আখড়া থেকে কলেজে যাওয়ার জন্য ঠিকানা পরিবহনের একটি বাসে উঠেন। তিনি শিক্ষার্থী হিসেবে হাফ ভাড়া দিতে চাইলে হেলপার মেহেদী হাসান তা নিতে রাজি হননি। এ নিয়ে একপর্যায়ে বিতণ্ডার জেরে কুরুচিপূর্ণ ও আপত্তিকরভাবে কথা বলেন মেহেদী। এমনকি ওই শিক্ষার্থী বাস থেকে নামার সময়ও হেনস্থা করা হয়। বিষয়টি ছাত্রীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ঢাকার আরও ৬-৭টি কলেজের শিক্ষার্থীরা এ নিয়ে প্রতিবাদ জানায়। আজ (২১ নভেম্বর) সকালে বকশিবাজার সড়ক অবরোধ করা হয় এবং তাদের পক্ষ থেকে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেওয়া হয়।

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। একটি কুচক্রি মহল বিষয়টি ভিন্নখাতে নেওয়ার চেষ্টা করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে র‌্যাব গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-১০ এর অভিযানে সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে ঠিকানা পরিবহনের ওই চালক ও হেলপারকে আটক করা হয়।

আটক দুজনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, রুবেল ও মেহেদী দৈনিক তিন হাজার টাকার চুক্তিতে মালিকের কাছ থেকে বাসটি নিয়ে পরিচালনা করতেন। তিন হাজার টাকার বেশি যা উঠতো তা দুজন ভাগ করে নিতেন। বাড়তি লাভের আশায় তারা পরস্পরের যোগসাজসে অর্ধেক ভাড়া নিতে চাইতেন না। এর ফলে ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে অশোভন আচরণ ও হেনস্থা করেন তারা।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হেলপার হাফ ভাড়া নিতে ইচ্ছুক ছিলেন না। অধিক মুনাফা ও বাড়তি টাকা উঠানোর জন্যই তারা এমনটি করেছেন। এতে মেহেদী ওই ছাত্রীকে গালাগালি করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছেন।

অপর প্রশ্নের জবাবে কমান্ডার মঈন বলেন, চালক নিজের লাইসেন্স আছে বলে দাবি করেছেন, তবে বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখব। এছাড়া বাসের কাগজপত্রও যাচাই করে দেখা হবে।

শেয়ার করুন