মহামারি করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ ও মৃত্যুরোধে সারাদেশে সরকারি উদ্যোগে বিনামূল্যে টিকাগ্রহীতার সংখ্যা প্রায় নয় কোটি ছুঁই ছুঁই।
চলতি বছরের গত ২৭ জানুয়ারি রাজধানীর কুর্মিটোলা হাসপাতালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ডের অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।সেই থেকে রোববার (২১ নভেম্বর) পর্যন্ত মোট ৮ কোটি ৯৬ লাখ ৪৬ হাজার ৮০৭ জনকে টিকা দেওয়া হয়। তাদের প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছেন ৫ কোটি ৪৭ লাখ ৮৩ হাজার ৬৪৮ জনকে ও দ্বিতীয় ডোজ টিকা নিয়েছেন ৩ কোটি ৪৮ লাখ ৬৩ হাজার ১৫৯ জন।
বর্তমানে সারাদেশে অ্যাস্ট্রাজেনেকা, ফাইজার, সিনোফার্ম ও মর্ডানা—এ চার ধরনের টিকা দেওয়া হচ্ছে। ২১ নভেম্বর পর্যন্ত রাজধানীসহ সারাদেশে সর্বোচ্চসংখ্যক সিনোফার্মের ৬ কোটি ৬৪ লাখ ৫৬ হাজার ২৫৮ টিকা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম ডোজ নিয়েছেন ৪ কোটি ৯ লাখ ৮৮ হাজার ৪৬৬ জন ও দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ২ কোটি ৫৪ লাখ ৬৭ হাজার ৭৯২ জন।
(২১ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক এমআইএস ও লাইন ডিরেক্টর এইচআইএস অ্যান্ড ই-হেলথ অধ্যাপক ডা. মিজানুর রহমান এ তথ্য জানান।
টিকাদান কর্মসূচির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত কয়েকজন স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, শুরুর দিকে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা শুধু করোনা রোগীদের সেবাদানের সঙ্গে সরাসরি জড়িত সম্মুখসারির করোনা যোদ্ধা চিকিৎসক ও নার্সসহ সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের সব স্বাস্থ্যকর্মী ও প্রবীণ দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী সময়ে অ্যাস্ট্রাজেনেকার পাশাপাশি ফাইজার, মর্ডানা এবং সিনোফার্মের টিকাও দেওয়া হয়। বয়সও পর্য়ায়ক্রমে কমিয়ে আনা হয়। বর্তমানে স্কুলশিক্ষার্থীরা পর্য়ন্ত করোনা টিকা পাচ্ছে।
রাজধানীসহ সারাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার টিকা নিয়েছেন ৭ লাখ ৮৭ হাজার ৮৭৪ জন। তাদের মধ্যে প্রথম ডোজ নিয়েছেন ৪ লাখ ৭৬ হাজার ৯৮৪ জন ও দ্বিতীয় ডোজের টিকা নিয়েছেন ৩ লাখ ১০ হাজার ৮৯০ জন। প্রথম ডোজ টিকাগ্রহীতার মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ২০ হাজার ৩৫২ জন ও নারী ২ লাখ ৫৬ হাজার ৬৩২ জন। দ্বিতীয় ডোজের টিকাগ্রহীতার মধ্যে পুরুষ এক লাখ ৪৬ হাজার ৯৭২ জন ও নারী ১ লাখ ৬৩ হাজার ৯১৮ জন।
২১ নভেম্বর পর্যন্ত নিবন্ধনকারীর সংখ্যা
২১ নভেম্বর পর্যন্ত নিবন্ধনকারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬ কোটি ৮৫ লাখ ১২ হাজার ৯১৫ জন। তাদের মধ্যে জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে ৬ কোটি ৭৫ লাখ ১৫ হাজার ২২৬ জন ও পাসপোর্টের মাধ্যমে ৯ লাখ ৯৭ হাজার ৬৮৯ জন নিবন্ধন করেন।
বর্তমানে দেশে চার ধরনের টিকা দেওয়া হচ্ছে। ২১ নভেম্বর পর্যন্ত অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা ১ কোটি ৫৭ লাখ ৪৫ হাজার ৬০ জনকে দেওয়া হয়েছে। তাদের প্রথম ডোজ নিয়েছেন ৯৩ লাখ ৪৫ হাজার ৭৯৮ জন ও দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ৬৩ লাখ ৯৯ হাজার ২৬২ জন।
২৭ জানুয়ারি থেকে ২১ নভেম্বর পর্যন্ত ফাইজার টিকা ২১ লাখ ১০ হাজার ৯৪৪ জনকে দেওয়া হয়েছে। তাদের প্রথম ডোজ নিয়েছেন ১৭ লাখ ৩৫ হাজার ৬২৭ জন ও দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ৩ লাখ ৭৫ হাজার ৩১৭ জন।
একই সময়ে সিনোফার্ম টিকা ৬ কোটি ৬৪ লাখ ৫৬ হাজার ২৫৮ জনকে দেওয়া হয়েছে। তাদের প্রথম ডোজ নিয়েছেন ৪ কোটি ৯ লাখ ৮৮ হাজার ৪৬৬ জন ও দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ২ কোটি ৫৪ লাখ ৬৭ হাজার ৭৯২ জন।
মর্ডানার টিকা নিয়েছেন ৫৩ লাখ ৩৪ হাজার ৫৪৫ জন। তাদের প্রথম ডোজ নিয়েছেন ২৭ লাখ ১৩ হাজার ৭৫৭ জন ও দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ২৬ লাখ ২০ হাজার ৭৮৮ জন।
মোট টিকাগ্রহীতার মধ্যে শিক্ষার্থীরাও রয়েছেন। ২১ নভেম্বর পর্যন্ত ৩ লাখ ৬৪ হাজার ৫৬৮ জন শিক্ষার্থীকে টিকা দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে প্রথম ডোজ নিয়েছে ৩ লাখ ৬৪ হাজার ৩৪৬ জন ও দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ২২২ জন।