রংপুরে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগের পর এলাকাবাসীর থানা ঘেরাওয়ের প্রেক্ষাপটে ভুক্তভোগী পরিবারসহ গ্রামবাসীকে যেন হয়রানি না করা হয় তা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। রংপুর মহানগর পুলিশের প্রতি এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি এ মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য ১ ডিসেম্বর দিন নির্ধারণ করেছেন আদালত। এ সময়ের মধ্যে লাশের ভিসেরা রিপোর্টও দাখিল করতে বলা হয়েছে।
আজ বুধবার বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্ত।
এর আগে গত ৩ নভেম্বর রংপুরের তাজুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় অভিযোগের বর্ণনা ও ওই ঘটনায় কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে মহানগর পুলিশ কমিশনারের প্রতিবেদন হাইকোর্টে আসে। প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, সুরতহাল রিপোর্টে আঘাতের চিহ্ন নেই। ওই ব্যক্তির কাছে ৫ গ্রাম হেরোইন পাওয়া গিয়েছিল। ওই ঘটনায় একজন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনারের নেতৃত্বে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়।
রংপুরের হারাগাছে ওই হত্যার অভিযোগের প্রেক্ষিতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা জানাতে মঙ্গলবার আদেশ দেন হাইকোর্ট। রংপুরের পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে কথা বলে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্তকে তা জানাতে বলা হয়েছিল।
গত ১ নভেম্বর সোমবার রংপুরের হারাগাছে পুলিশের বিরুদ্ধে তাজুল ইসলামকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ ওঠে। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে হারাগাছের নতুন বাজার বছি বানিয়ার তেপতি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। তাজুল ইসলাম উপজেলার হারাগাছ নয়াটারী দালালহাট গ্রামের বাসিন্দা। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে নয়া বাজার বছি বানিয়ার তেপতি থেকে তাজুল ইসলামকে মাদকসহ আটক করে পুলিশ। এ সময় তিনি পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করে পালানোর চেষ্টা করেন। পুলিশ তাকে মারধর করলে ঘটনাস্থলেই মারা যান তাজুল ইসলাম। পরে ঘটনাটি জানাজানি হলে এলাকাবাসী বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে থানা ঘেরাও করেন। বিক্ষুব্ধ জনতা ইটপাকটেল ছুড়ে মারার পাশাপাশি পুলিশের গাড়িসহ বেশ কয়েকটি যানবাহন ভাঙচুর করেন। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।