সারের ক্ষেত্রে ভর্তুকি কয়েকগুণ বেড়ে গেলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারের দাম না বাড়ানোর আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।
বুধবার (২৪ নভেম্বর) সচিবালয়ে নেদারল্যান্ডস ও যুক্তরাজ্য সফর-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী এ কথা জানান।
ডিজেলের দাম বাড়ানোর প্রভাব কৃষিতে পড়বে কি না, এক্ষেত্রে সরকার কৃষকদের কীভাবে সহায়তা করবে—জানতে চাইলে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রভাব তো অবশ্যই পড়বে, এটা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। এমনি আমাদের কৃষকরা নানা সমস্যায় জর্জরিত। পিক সিজনে তারা ফসলের দাম পান না। সেজন্য কৃষিপণ্য প্রসেসিংয়ের কথা আমরা বলছি, বাণিজ্যিকীকরণ কিংবা বিদেশে রপ্তানি…বাজারে গিয়ে তারা যাতে ভাল দাম পান, এগুলোর উদ্যোগ গ্রহণ করা।’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী এই বিষয়টার ওপরেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। তবে আমরা একটা বিষয়ে নিশ্চয়তা দিতে চাই- যে সারের দাম আড়াইশ/২৩০/২৭০ ডলার ছিল, সেটা এখন ৮০০/৯০০ ডলার। চারগুণ বেড়েছে। আমরা সারে ৯০০ কোটি টাকা দেই সাবসিডি (ভর্তুকি)। এটা এবার মনে হয় ২০ হাজার কোটি টাকা দিতে হবে। তবে প্রধানমন্ত্রী এখন পর্যন্ত আমাদের বলেছেন, উনি সারের কোনো দাম বাড়াবেন না।’
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘৪০ শতাংশ সেচ মেশিন বিদ্যুতে চলে, তাদের খুব অসুবিধা হবে না। কিন্তু ডিজেলের ক্ষেত্রে সমস্যা হবে। দেখা যাক, দামের ট্রেন্ডটা তো কমের দিকে আছে, যদি কমে সরকারও ডিজেলের দাম কমাবে।’
ডিজেলে ভর্তুকি দেওয়া ঝামেলা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘এটা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। এটা নিয়ে বিক্রি করে দেবে। সেচ যন্ত্রের কথা বলে অন্য কাজে ডিজেল ব্যবহার করবে। ডিজেলে সাবসিডি দেওয়া কঠিন হবে।’
তামাক চাষ বন্ধে সরকারের পরিকল্পনার বিষয়ে জানতে চাইলে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে তামাক চাষে একদমই উৎসাহিত করি না। আমাদের নীতিগত সিদ্ধান্ত হলো- এটাকে নিরুৎসাহিত করা। তারপরও এখনও কিছু মানুষ তামাক খায়।’
ড. আব্দুর রাজ্জাক আরও বলেন, ‘ইদানীং একটা বিষয় শুরু হয়েছে। জাপানের মতো একটি দেশ যারা নীতি ও আদর্শের প্রশ্নে…মানবিক দিকগুলো নিয়ে অনেক কাজ করেন এবং নীতিতে খুবই অটল। তারা এ দেশে এসে বিনিয়োগ করছে তামাকের ওপরে, রপ্তানি করার জন্য। যেটায় একটা ভালো আয় আসছে তামাক থেকে। সরকার খুবই দ্বিধা-দ্বন্দ্বের মধ্যে রয়েছে। তবে আমাদের নীতিগত সিদ্ধান্ত পলিসি লেভেলে আমরা আস্তে আস্তে তামাক থেকে বেরিয়ে আসবো। তামাক এই দেশে ফসল হিসেবে থাকবে না।’