রাজধানীর গুলিস্তান চত্বরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ময়লার ট্রাকের ধাক্কায় নটরডেম কলেজের শিক্ষার্থী নাঈম হাসানের মৃত্যু ঘটনায় অভিযুক্ত চালককে গ্রেফতার করেছে র্যাব। তার নাম হারুন মিয়া। তিনি মূলত অবৈধ পন্থায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) থেকে ময়লার ট্রাক বরাদ্দ নিয়ে পরিচ্ছতাকর্মী রাসেল খানকে দিয়ে গাড়িটি চালাতেন। নাঈমের মৃত্যুর পর গ্রেপ্তার এড়াতে আত্মগোপনে যান হারুন।
শুক্রবার ভোররাতে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থেকে হারুনকে গ্রেফতার করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। এবিষয়ে র্যাব ব্রিফিং করে বিস্তারিত জানাবে।
গত বুধবার নটরডেম শিক্ষার্থী নাঈম হাসান বাসা থেকে কলেজে যাচ্ছিলেন। বেলা পৌনে ১২ টার দিকে গুলিস্তানে ট্রাকচাপায় সে আহত হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।
ডিএমপির মতিঝিল বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) আব্দুল আহাদ বলেন, গাড়িটি তখন চালাচ্ছিলেন রাসেল খান। তিনি প্রকৃতপক্ষে ওই গাড়ির চালক নন। আমরা গাড়ির কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে এবং গ্রেপ্তার রাসেলকে জিজ্ঞাসাবাদে জেনেছি, গাড়িটির মূল চালক হারুন।
সূত্রে জানা গেছে, হারুন মিয়া ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) বিশেষ ট্রাক পরিচ্ছন্নতাকর্মী। কিন্তু তিনি এই ট্রাকটি মোটা অংকের টাকা দিয়ে নিজের নামে বরাদ্দ নেন। এতেই হয়ে ওঠেন ডিএসসিসির ময়লার গাড়িচালক।
সূত্রটি জানিয়েছে, হারুনের নিজের ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। অবৈধভাবে তিন লাখ টাকায় তিন মাসের জন্য ময়লার গাড়ি বরাদ্দ নেন তিনি। গত দেড় বছর ধরে তিনি ডিএসসিসির ময়লার গাড়ি চালানোর দায়িত্বে রয়েছেন। তিন লাখ টাকায় বরাদ্দ নিলেও তার আয় হতো দ্বিগুণ টাকা। এছাড়াও গাড়ির তেল চুরির কারসাজিও করতেন।
ডিএসসিসির একাধিক সূত্র জানায়, ময়লার গাড়ির জন্য প্রতিদিন বরাদ্দকৃত ১১ লিটার তেলের মধ্যে ছয় লিটার চুরি করে বিক্রি করে দেওয়া হতো। এভাবে হারুন প্রতিমাসে ১৮০ লিটার তেল চুরি করে বিক্রি করে দিতেন। এতে তার আয় কয়েকগুণ বেড়ে যায়।
এদিকে সহপাঠীর মৃত্যুর ঘটনায় দোষীদের শাস্তির দাবিতে টানা দুই দিন রাজধানীর মতিঝিল, গুলিস্তান, ফার্মগেট ও উত্তরায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা। ট্রাফিক আইন কঠোরসহ ১০ দফা দাবি জানিয়ে বৃহস্পতিবার ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেয় তারা।