‘নতুন ফেসবুক বা মেটার নিয়মানুযায়ী অনুমতি ছাড়া তারা ব্যবহারকারীর তথ্য-ছবি ব্যবহার করতে পারবে’—ফেসবুকের নীতি বদল বলে এমন একটি পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছে। কিন্তু জনপ্রিয় ফ্যাক্ট-চেকার সাইট পলিটি-ফ্যাক্ট বলছে, এটি গুজব। ফেসবুক তাদের নীতিতে এ ধরনের কোনো পরিবর্তন আনেনি।
এছাড়া ফেসবুক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি ফ্যাক্ট চেক বলছে, ছড়ানো খবরটি মিথ্যা, এমন দাবির কোনো ভিত্তি নেই।
ছড়িয়ে পড়া পোস্টে বলা হয়েছে, আগামীকাল থেকে নতুন ফেসবুক/মেটা নিয়ম শুরু হবে, যেখানে তারা আপনার ছবি ব্যবহার করতে পারবে। ভুলে যাবেন না, আজ শেষ দিন! তাই একটা কাজ করে রাখুন। এটিই আপনার বিরুদ্ধে মামলায় ব্যবহার করা যেতে পারে; আপনি যা কিছু পোস্ট করেছেন- এমনকি মেসেজ যা মুছে ফেলা হয়েছে। এতে কোনো খরচ নেই, শুধু কপি করে পোস্ট করুন, পরে আফসোস করার চেয়ে ভালো হবে।
‘ইউসিসি আইনের অধীনে ১-২০৭, ১-৩০৮… আমি আমার অধিকার সংরক্ষণ আরোপ করছি… আমি ফেসবুক/মেটা বা অন্য কোনো ফেসবুক/মেটা সম্পর্কিত ব্যক্তিকে আমার ছবি, তথ্য, বার্তা বা বার্তা ব্যবহার করার অনুমতি দিচ্ছি না, অতীতে এবং ভবিষ্যতে কোনো সময়েই।’
এতে আরও বলা হয়েছে, ‘এই পোস্টটি কপি করে আপনার নিজের পেজে পোস্ট করে রাখুন এবং ঘোষণা দিন যে, আপনি ফেসবুক/মেটাকে তাদের ওয়েবসাইটে পোস্ট করা আমার তথ্য অন্য কোথাও শেয়ার করার অনুমতি দিচ্ছি না। ছবি, বর্তমান বা অতীত, বন্ধু-বান্ধব, ফোন নম্বর, ইমেইল এড্রেস, ব্যক্তিগত কোনো তথ্য বা পোস্ট এসবের কোনো কিছুই আমার লিখিত অনুমতি ছাড়া ভিন্নরূপে ব্যবহার করা যাবে না।’
ফ্যাক্ট-চেকার সাইট পলিটি ফ্যাক্ট বলছে, এটি একটি গুজব। ফেসবুক বা মেটার পক্ষ থেকে টার্মস অব সার্ভিস (পরিষেবা শর্তাবলী) পরিবর্তনের কোনো তথ্য জানানো হয়নি।
প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, এর আগেও ফেসবুকের বিরুদ্ধে এমন গুজব ছড়ানো হয়েছে। ২০১২ সালের নভেম্বরে যখন প্রথম ফেসবুক প্রকাশ্যে তাদের ব্যবসা শুরু করে তখন এ ধরনের গুজব ছড়ানো হয়েছিল।
থাইল্যান্ড ও লাওসে ফেসবুকের যোগাযোগ ব্যবস্থাপক মানাশুয়েন কোভাপিরাত এএফপি ফ্যাক্ট চেককে বলেছেন, ‘আমি নিশ্চিত করতে পারি, ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া বার্তাগুলো সত্য নয়।’
সম্প্রতি কোম্পানি হিসেবে ফেসবুক নাম পরিবর্তন করে। তাদের নতুন নাম দেওয়া হয় মেটা। নাম পরিবর্তন করলেও প্রতিষ্ঠানটির নীতিমালায় কোনো পরিবর্তন আসেনি বলে তারা জানায়।
ফেসবুক তাদের কোম্পানি পরিষেবা শর্তাবলীর পৃষ্ঠার শীর্ষে উল্লেখ করে, ‘যদিও আমাদের কোম্পানির নাম পরিবর্তন হচ্ছে, আমরা ফেসবুক অ্যাপসহ আগের মতো একই সেবা দিচ্ছি। আমাদের ডেটা নীতি ও পরিষেবা শর্তাবলী আগের মতো থাকবে। আমরা কীভাবে ডেটা ব্যবহার করি বা শেয়ার করি তা এই নাম পরিবর্তনের বিষয়টি কোনোভাবেই প্রভাবিত করে না।’
এএফপি ফ্যাক্ট চেক দলের প্রতিবেদনে বলা হয়, ফেসবুকের নামে ছড়ানো ওই ভুয়া বার্তাটি বিশ্বের অনেক দেশের ফেসবুক ব্যবহারকারীদের মধ্যে ভাইরাল হয়েছে। বাংলাদেশের পাশাপাশি থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, নিউজিল্যান্ড, ইথিওপিয়া ও সিঙ্গাপুরে পোস্টটি বেশি দেখা যাচ্ছে।