ভোলায় নির্বাচনী এলাকা থেকে ফেরার সময় মাঝনদীতে ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের ট্রলারে গুলিবর্ষণ করেছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় নামে এক যুবলীগ নেতা নিহত হয়েছেন।
নিহত টিটু ভোলা সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের তছির আহম্মেদের ছেলে এবং ওই ইউনিয়নের যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।।
শুক্রবার (২৬ নভেম্বর) বিকেল ৫টার দিকে সদর উপজেলার ধনিয়া ও দৌলতখান উপজেলার মদনপুর ইউনিয়নের মধ্যবর্তী মেঘনা নদীতে এ ঘটনা ঘটে।
মদনপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত ইউপি মেম্বার ইয়ারুল আলম হেলাল বলেন, গত ১১ নভেম্বর ভোলার দৌলতখান উপজেলার মদনপুর ইউনিয়নের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে বিজয়ী চেয়ারম্যান একেএম নাছিল উদ্দিন নান্নুসহ আমরা কয়েকজন ইউপি মেম্বার আজ সকালে ধনিয়া ইউনিয়নের নাছির মাঝি ঘাট থেকে ট্রলারে করে মদনপুর ইউনিয়নের উদ্দেশ্যে রওনা হই। মদনপুর পৌঁছে আমরা স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে দেখা করি এবং খোঁজখবর নেই। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে দিকে নাছির মাঝির উদ্দেশ্যে ট্রলারে করে রওনা হই।
তিনি আরও বলেন, সদর উপজেলার ধনিয়া ও দৌলতখান উপজেলার মদনপুর ইউনিয়নের মধ্যবর্তী মেঘনা নদীতে এলে একটি স্পিডবোট করে একদল দুর্বৃত্ত আমাদের ট্রলার লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে টিটুর মাথায় গুলি লাগে। পরে ট্রলারটি দ্রুত তীরে ভিড়িয়ে তাকে ভোলা সদর হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছিল। তবে পথেই তিনি মারা যান।
প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহতের চাচাতো ভাই জিসান জানান, সকালে দৌলতখান উপজেলার মদনপুর ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান নাছির উদ্দিন নান্নু তার কর্মীদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাতের জন্য ভোলা সদর থেকে মদনপুর ইউনিয়নে যান। তার সাথে ধনিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খোরশেদ আলম টিটুও মদনপুরে যান। তারা সেখান থেকে দুপুরে খাবার খেয়ে মদনপুর চেয়ারম্যান নাছির উদ্দিন নান্নুসহ ট্রলারযোগে ভোলায় রওনা দেন। ট্রলারটি নাজির মাঝি ঘাটের কাছাকাছি পৌঁছালে একটি স্পিডবোটে ৮-১০ জন সন্ত্রাসী এসে ট্রলার থাকা মানুষজনকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এসময় ট্রলারের মাঝি ট্রলারটি উল্টোদিকে ঘুরিয়ে স্পিডবোটকে ধাক্কা দিলে বোটটি উল্টে যায়। এ অবস্থায় সন্ত্রাসীরা নদী পড়ে গিয়ে পানিতে থেকেই ট্রলার লক্ষ্য করে গুলি চালাতে থাকে। এতে ট্রলারে থাকা খোরশেদ আলম টিটুর মাথায় গুলি লাগলে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে ট্রলারটি ঘাটে এলে আহত খোরশেদ আলম টিটুকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত পরিবারের দাবি, মদনপুর ইউনিয়নের পরাজিত প্রার্থী জামাল উদ্দিন সকেট তার ভাগিনা নিরবের নেতৃত্বে সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে পরিকল্পিতভাবে বিজয়ী প্রার্থী নাছির উদ্দিন নান্নুকে হত্যার উদ্দেশ্যে এ হামলা করেছে। তারা এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।
সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার আশ্রফুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই গুলিবিদ্ধ খোরশেদ আলমের মৃত্যু হয়েছে। তার কপালে গুলির চিহ্ন রয়েছে এবং চোখ ফুলা ছিল।
এ ব্যাপারে পরাজতি প্রার্থী জামাল উদ্দিন সকেটকে একাধিকবার মোবাইলে ফোন করলেও তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনায়েত হোসেন নিহতের তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। এ ঘটনা তদন্ত করে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ভোলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, গুলিবিদ্ধ হয়ে একজন নিহত হয়েছেন। যে স্পিডবোটে করে এসে দুর্বৃত্তরা গুলি চালায় সেটি জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত চলছে।