এলডিসি থেকে উত্তরণ নিঃসন্দেহে বড় অর্জন

সম্পাদকীয়

র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি।
র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি। ফাইল ছবি

স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে বাংলাদেশের উত্তরণের সুপারিশ জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে অনুমোদিত হয়েছে। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৬তম বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। মাথাপিছু আয়, মানবসম্পদ, জলবায়ু ও অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা—এই তিন সূচক হলো উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার প্রধান মাপকাঠি। এর মধ্যে যেকোনো দুটি সূচকে যোগ্যতা অর্জন করতে হয় কিংবা মাথাপিছু আয় নির্দিষ্ট সীমার দ্বিগুণ করতে হয়। বাংলাদেশ তিনটি সূচকেই ভালো করেছে। বাংলাদেশ যে সক্ষমতা অর্জন করেছে, এর প্রতিফলন হলো এলডিসি উত্তরণে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অনুমোদন।

এলডিসি থেকে উত্তরণে বাংলাদেশ বেশ কিছু বিষয়ে সুবিধা পাবে। বিশেষ করে সারা বিশ্বে বাংলাদেশের ব্র্যান্ডিং হবে। বিশ্বের প্রতিটি দেশ এখন বাংলাদেশকে আরো সমীহ করবে। বিশ্বদরবারে দর-কষাকষিতে বাংলাদেশের অবস্থান আরো শক্ত হবে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের এ সময়ে এটি আমাদের জন্য একটি বড় অর্জন নিঃসন্দেহে।তবে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় উন্নীত হওয়ার পর বাংলাদেশকে কিছু কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হতে হবে। অবশ্য এ ক্ষেত্রে কিছুটা স্বস্তির বিষয় হলো, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের সুপারিশ জাতিসংঘে অনুমোদন পাওয়ার পর উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে সাধারণভাবে প্রস্তুতির জন্য তিন বছর সময় দেওয়া হলেও করোনার কারণে অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এবার পাঁচ বছর সময় দেওয়া হবে। প্রস্তুতির এ সময়ে স্বল্পোন্নত দেশ হিসাবে প্রাপ্য সব সুযোগ-সুবিধা অব্যাহত থাকবে। তাছাড়া বর্তমান নিয়মে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে বাংলাদেশ ২০২৬ সালের পর আরও তিন বছর শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা ভোগ করতে পারবে।

এলডিসি থেকে উত্তরণের পর নতুন করে বেশকিছু চ্যালেঞ্জ আসবে বাংলাদেশের সামনে, যা মোকাবেলার প্রস্তুতি এখন থেকেই শুরু করা প্রয়োজন। উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের ফলে বাণিজ্য প্রতিযোগিতা সক্ষমতার ওপর যে বিরূপ প্রভাব পড়বে, তা মোকাবেলায় প্রস্তুতি নিতে হবে। অবশ্য বাংলাদেশ এখন আসন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কৌশলগত পরিকল্পনা নির্ধারণ করছে, যাতে ভবিষ্যতে এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে দেশকে দ্রুত উন্নত বিশ্বে পরিণত করা যায়। প্রধানমন্ত্রী এরই মধ্যে মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করেছেন। এ কমিটি সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জগুলো শনাক্ত করে সেগুলো সমাধানের পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে যথাযথভাবে কাজ করবে বলেই আমাদের প্রত্যাশা।

শেয়ার করুন