শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ পাশের (বাসে অর্ধেক ভাড়া) বিষয়ে বৈঠকে বসে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বলেছেন, ঢাকায় চলাচলকারী পরিবহণ মালিকদের ৮০ শতাংশ গরিব। একটি বাস দিয়ে নিজের সংসার চালায় কেউ কেউ। তারা কীভাবে ক্ষতি সামলাবে।
আজ শনিবার রাজধানীর বনানীতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) এবং পরিবহণ মালিক ও শ্রমিক নেতাদের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে হাফ ভাড়া কার্যকর করা নিয়ে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরেন পরিবহণ নেতারা। ঢাকার বনানীতে বিআরটিএ কার্যালয়ে টানা দুই ঘণ্টা বৈঠক চলে।
বৈঠকে ঢাকা সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতির সভাপতি আবদুল বাতেন বাবু, সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্যাহ, বিআরটির চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সহকারী কমিশনার মো. আশফাকসহ বিআরটিএর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
শিক্ষার্থীদের জন্য বাসে হাফ ভাড়া চালুর বিষয়ে বিআরটিএ এবং পরিবহণ মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় বৈঠকেও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। উল্টো সরকারের কাছে পরিবহণ নেতারা টাস্কফোর্স গঠন করে তাদের জন্য ভর্তুকি নির্ধারণ করার দাবি জানান।এ ছাড়া বিআরটিএ’র সঙ্গে আলোচনায় নেতারা ১১টি প্রস্তাব দিয়েছেন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার হাফ ভাড়া নিয়ে সড়ক পরিবহণ সচিবের সভাপতিত্বে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিবপর্যায়ে বৈঠক হয় পরিবহণ মালিক ও শ্রমিক নেতাদের মধ্যে। সেই বৈঠকেও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
বৈঠকে খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বলেন, ঢাকায় নগর পরিবহণের যে বাসগুলো চলে, তার মালিকদের ৮০ শতাংশই গরিব। একটা বা দুটো বাস চালিয়ে তাদের সংসার চলে। তাদের বাচ্চারাও স্কুল কলেজে যায়।এ কারণে পরিবহণ মালিক-শ্রমিকদের প্রস্তাব হচ্ছে, বাস মালিকদের ক্ষতিপূরণ বা ভর্তুকির বিষয়টি নির্ধারণ করেই হাফ ভাড়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কোন তহবিল থেকে এই ভর্তুকি আসবে সেটিও নির্ধারণ করতে হবে।
হাফ ভাড়া চালু হলে মোট ক্ষতি বা ভর্তুকি নিয়ে এনায়েত উল্লাহ বলেন, হাফ ভাড়ার দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছে। তাদের দাবির যৌক্তিক সমাধানে প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। তাৎক্ষণিক কিছু করা যাবে না। সময়ের প্রয়োজন আছে, টাস্কফোর্স ছাড়া এটি সম্ভব নয়। সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠান নিয়ে একটি টাস্কফোর্স গঠন করে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। হাফ ভাড়ায় ক্ষতির পরিমাণ টাস্কফোর্স নির্ধারণ করবে।
এ সময় প্রচলিত হাফ ভাড়ার বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পরিবহণ মালিক নেতারা দাবি করেন, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে হাফ ভাড়া নেওয়ার কোনো বিধান আগেও ছিল না, এখনো নেই। ছাত্রদের বচসায় কোনো কোনো পরিবহণ শ্রমিক এটা মেনে নিতেন। তবে সরকারিভাবে সিদ্ধান্ত হলে এটি সবাইকে দিতে হবে।
এ সময় ছাত্রত্ব প্রমাণ নিয়েও প্রশ্ন তুলেন পরিবহণ নেতা এনায়েত উল্লাহ। তিনি বলেন, যে দেশে ভোটার আইডি কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স জাল হয়, সেখানে ছাত্রত্ব কীভাবে প্রমাণ হবে।