না ফেরার দেশে চলে গেলেন জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম

নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় অধ্যাপক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম
ফাইল ছবি

না ফেরার দেশে চলে গেলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত নজরুল গবেষক জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
আজ মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর।

এ তথ্য নিশ্চিত করেছে হাসপাতাল সূত্র।

universel cardiac hospital

অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম গত ৭ অক্টোবর পেটব্যথা নিয়ে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (বিএসএমএমইউ) ভর্তি হন। সেখানে কয়েকটি টেস্টে তার ফুসফুসে পানি ধরা পড়ে।

এরপর থেকে তিনি সেখানে বক্ষব্যাধি (রেসপিরেটরি মেডিসিন) বিভাগের অধ্যাপক ডা. এ কে এম মোশাররফ হোসেনের অধীনে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।

অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম ১৯৩৪ সালের ১ জানুয়ারি চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার কলাকান্দা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন।

পরে আমেরিকার কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়, মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয়, মিশিগান-অ্যান আরবর বিশ্ববিদ্যালয় এবং হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইস্ট ওয়েস্ট সেন্টারে ভাষাতত্ত্বে উচ্চতর প্রশিক্ষণ নেন ও গবেষণা করেন।

১৯৫৮ সাল থেকে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে যোগ দেন। এরপর থেকেই তিনি নজরুল গবেষণায় নিয়োজিত ছিলেন। অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ও বাংলা একাডেমির সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন।

২০১৮ সালের ১৯ জুন বাংলাদেশ সরকার তাকে জাতীয় অধ্যাপক ঘোষণা করে। একই বছরের ৩ ডিসেম্বর তিনি কবি নজরুল ইনস্টিটিউটের সভাপতি পদে যোগদান করেন।

তিনি বাংলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক। তিনি যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।

অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম ১৯৫২ সালে মহান ভাষা আন্দোলন এবং ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর বন্দিশিবিরে নির্যাতিত হন।

ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি, ইতিহাস এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক তার বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য প্রকাশনা রয়েছে।

সাহিত্য চর্চা ও গবেষণার পাশাপাশি শিক্ষাক্ষেত্রেও অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১২ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করে। এছাড়া তিনি একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, নজরুল একাডেমি পুরস্কার অর্জন করেন। এছাড়া মাতৃভাষা সংরক্ষণ, পুনরুজ্জীবন, বিকাশ, চর্চা, প্রচার-প্রসারে অবদান রাখায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক লাভ করেন।

শেয়ার করুন