প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মানুষের ক্রয় ক্ষমতা যত বেশি বৃদ্ধি পাবে, আপনাদের ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসারও ঘটবে। আপনাদের শিল্প কলকারখানার উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করার জন্য বাজার সৃষ্টি হবে। আরও বেশি পণ্য বিক্রি হবে। মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হবে, আপনাদেরও আয় বৃদ্ধি পাবে। তিনি বলেন, সেদিকে বিবেচনায় রেখে আপনারা মানুষের পাশে দাঁড়াবেন এটাই আমরা চাই।
বুধবার (১ ডিসেম্বর) স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ১৬ দিনব্যাপী ‘বিজয়ের ৫০ বছর-লাল সবুজের মহোৎসব’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে (ভার্চুয়াল) এ আহ্বান জানান তিনি।
রাজধানীর হাতিরঝিল সংলগ্ন এম্ফিথিয়েটারে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সহযোগিতায় ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন হচ্ছে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফবিসিসিআই) আয়োজিত এ অনুষ্ঠানমালা আগামী ১৬ ডিসেম্বর পরযন্ত চলবে।
দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতাদের মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আপনাদের কাছে একটা দাবি থাকবে আপনারা ব্যবসা বাণিজ্য করেন, প্রত্যেকেই তো এই দেশেরই কোনও না কোনও গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছেন, কোথাও না কোথাও কোনও স্কুলে পড়াশোনা করেছেন, নিজ নিজ এলাকায় হলেও সেখানকার মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে সরকারি কর্মসূচির পাশাপাশি আপনারাও কিছু কর্মসূচি নেবেন।
দরিদ্র মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে সরকারের পাশাপাশি ব্যবসায়ীদেরও কিছু কর্মসূচি গ্রহণের আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, তাদের আর্থিক সক্ষমতা যেন বৃদ্ধি পায়, ক্রয় ক্ষমতা যাতে বৃদ্ধি পায়, এ ব্যাপারেও আপনারা কাজ করবেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবাই বাংলাদেশকে উন্নত করার জন্য, আর বাংলাদেশের মানুষকে দারিদ্র্যের হাত থেকে মুক্তি দিয়ে একটি উন্নত সমৃদ্ধ, ক্ষুধা দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ গড়ার কাজ করে যাবেন আজকের দিনে আমি সেই আহ্বান জানাই।
আওয়ামী লীগ সরকার ব্যবসাবান্ধব সরকার মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সবসময় ব্যবসাবান্ধব, এতে কোনও সন্দেহ নাই। সেটা নিশ্চয়ই আপনারা এতদিনে উপলব্ধি করতে পেরেছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা ব্যবসা করতে আসিনি। কিন্তু ব্যবসায়ীদের সকল ধরনের সুযোগ সুবিধা সৃষ্টি করে দেওয়া, ব্যবসার প্রসার ঘটানো এবং আমাদের নারী-পুরুষ সকলে নির্বিশেষে যেন তারা আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারেন এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের মাধ্যমে সমৃদ্ধি আসে, এজন্য আমরা সব সময় বেসরকারি খাতকেও সুযোগ দেই, সুযোগ সৃষ্টি করে দেই। পাশাপাশি আমাদের দেশের একেবারে তৃণমূলের যে মানুষগুলো পড়ে আছে, তাদের উন্নয়নের জন্য ব্যাপক কাজ করি।
দেশকে এগিয়ে নিতে সরকার পরিকল্পিতভাবে কাজ করছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা অনেক দূর এগিয়ে গেছি। আজকে আমরা উন্নয়নশীল দেশ। উন্নয়নশীল দেশের মর্্যাদা পেয়েছি। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে দেশকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার অনেক সুযোগ আমরা পাবো। এটা হয়তো উন্নয়নশীল দেশ না হলে পেতাম না। এই জন্য হয়তো অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে, সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য আমরা সব সময় প্রস্তুত।
শেখ হাসিনা বলেন, অন্তত আওয়ামী লীগ সরকার যতক্ষণ ক্ষমতায় আছে, আমরা কিন্তু সেখান থেকে পিছিয়ে থাকি নাই। আমরা সেই প্রস্তুতিও নিয়েছি।
অনুষ্ঠানে হাতিরঝিল প্রান্তে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন— প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।