বর্জ্য থেকে হবে বিদ্যুৎ, নতুন অধ্যায়ে বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

তাজুল ইসলাম
তাজুল ইসলাম। ফাইল ছবি

বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে চীনের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি সই হয়েছে। ইনসিনারেশন পদ্ধতি অর্থাৎ বর্জ্য পুড়িয়ে এ বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে। ৪২ দশমিক ৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন এ বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা হবে ঢাকার আমিনবাজারে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হলো।

আজ বুধবার রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে স্থানীয় সরকার বিভাগ, বিদ্যুৎ বিভাগ, উত্তর সিটি করপোরেশন এবং চায়না মেশিনারি ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশনের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এ প্রকল্পে ব্যয় হবে প্রায় ১৫ হাজার ৩২৫ কোটি টাকা। এ বিদ্যুৎকেন্দ্রে প্রতিদিন তিন হাজার টন বর্জ্য লাগবে। প্রতি কিলোওয়াট বিদ্যুতের দাম পড়বে ১৮ দশমিক ২৯৫ টাকা।

অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ইনসিনারেশন পদ্ধতি অর্থাৎ বর্জ্য পুড়িয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনে যে পরিমাণ ময়লা-আবর্জনা প্রয়োজন হবে তা সরবরাহ করলে শহরে ময়লার সমস্যা থাকবে না। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করেই বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। কার্যক্রম শুরু হওয়ার ১৮ মাসের মধ্যেই বিদ্যুৎ উৎপাদনে যাবে চীনা কোম্পানি। এ ব্যাপারে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, চীনা কোম্পানি নিজ ঝুঁকিতে প্ল্যান্ট স্থাপন, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ করবে। সিটি করপোরেশন প্রয়োজনীয় জমি ও নিয়মিত বর্জ্য সরবরাহ করবে। আর উৎপাদিত বিদ্যুৎ ক্রয় করবে বিদ্যুৎ বিভাগ।

তাজুল ইসলাম জানান, শুধু ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নয় দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ এবং চট্টগ্রামসহ দেশের সব সিটি করপোরেশন, বিভাগীয় ও জেলা শহর এমনকি পৌরসভাগুলোতেও বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে কার্যক্রম চলমান রয়েছে। যেসব বিভাগীয় বা জেলা শহর অথবা পৌরসভা প্রতিদিন ৬০০ টন ময়লা আবর্জনা সরবরাহ করতে পারবে তারা বিদ্যুৎ বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে সরাসরি বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন যেতে পারবে।

এ সময় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন কার্যক্রম শুরু করার কথা উল্লেখ করেন তাজুল ইসলাম। তিনি জানান, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, ভারতসহ বিভিন্ন দেশ সফরে গিয়ে সেসব দেশের বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করা হয়।

এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, জাপান এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যে মডেল অনুসরণ করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে তার চেয়ে বাংলাদেশের জন্য ইনসিনারেশন অর্থাৎ বর্জ্য পুড়িয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন পদ্ধতি সর্বোত্তম। এই পদ্ধতিতে পরিবেশের কোনো ক্ষতি হয় না। তাই প্রধানমন্ত্রীর সম্মতি নিয়ে বর্জ্য পুড়িয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও বিজয়কে ম্লান ও অর্থহীন করতে এবং বাংলার মানুষ যাতে স্বাধীনতার সুফল ভোগ করতে না পারে সেজন্য ষড়যন্ত্র চলছে বলেও উল্লেখ করেন মন্ত্রী। এ বিষয়ে সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মো. হাবিবুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত চায়নার রাষ্ট্রদূত লি জিমিং।

শেয়ার করুন