এক সপ্তাহেরও কম সময় আগে দক্ষিণ আফ্রিকায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) কর্তৃপক্ষের কাছে সে দেশে করোনার নতুন অতি সংক্রামক ওমিক্রন ধরন পাওয়ার কথা জানানো হয়। এরই মধ্যে তা বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। উদ্বিগ্ন বিভিন্ন দেশ এ জন্য দক্ষিণ আফ্রিকাসহ আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলের কয়েকটি দেশের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ৩০ নভেম্বর দেশগুলোর প্রতি ওমিক্রন করোনা ভাইরাসের বিষয়ে ‘শান্ত’ থেকে ‘যৌক্তিক’ ব্যবস্থা নেওয়ার আহবান জানিয়েছে।
তার মানে, বিশ্বব্যাপী নতুন স্বাস্থ্যগত বিপদ ঘণ্টা বেজে উঠেছে। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম রোগীর সন্ধান পাওয়ার পর করোনার সবচেয়ে বিপজ্জনক ধরন ছিল ডেল্টা, যা বাংলাদেশে জুলাই মাসে চালায় ভয়ঙ্কর তান্ডব। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকায় শনাক্ত হওয়া করোনা ভাইরাসের ধরন ওমিক্রন এ যাবত কালের সর্বোচ্চ শক্তিসম্পন্ন ধরন বলে জানা গেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ধরনটিকে ‘উদ্বেগজনক’ বলে আখ্যায়িত করেছে । কারণ হিসেবে সংস্থাটি ওমিক্রনের বার বার জিনগত রূপ বদল এবং করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের আবারও এ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিকে সামনে তুলে ধরেছে। ধরনটি বার বার জিনগত রূপ বদল এবং মানুষের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিতে সক্ষম বলে বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা।
এমন বাস্তবতায় বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন জরুরি হয়ে পড়ায় বাংলাদেশের সব বিমানবন্দর, স্থলবন্দরসহ দেশের সব প্রবেশপথে স্ক্রিনিং আরও জোরদার করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে সারা দেশেই স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে চলতে ও মাস্ক পরতে উদ্বুদ্ধ করতে সব জেলা শহরের প্রশাসনকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অবশ্য এজন্য দরকার হবে ওমিক্রন-সংক্রমণ সংক্রান্ত পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখা এবং প্রয়োজনে জরুরি ভিত্তিতে কার্যকর সিদ্ধান্ত গ্রহণ।
বর্তমানে দেখা যাচ্ছে কিছু মানুষ আংশিক কিংবা সম্পূর্ণভাবেই স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে চলেছে। এই প্রবণতা ভয়ঙ্কর। আমরা দেশবাসীর কাছে সনির্বন্ধ অনুরোধ জানাই স্বাস্থ্যবিধি শতভাগ মেনে চলার। দেশে ওমিক্রনের আঘাত থেকে বাঁচতে হলে প্রত্যেককেই সচেতন ও সক্রিয় উদ্যোগ নিতে হবে। বিশেষ করে সবাইকে সতর্ক ও সচেতন থাকতে হবে । প্রয়োজনে সরকারকে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।