ডিসেম্বরের শেষার্ধে শৈত্যপ্রবাহ, বাড়তে পারে বৃষ্টি

নিজস্ব প্রতিবেদক

শৈত্যপ্রবাহ
ফাইল ছবি

চলতি ডিসেম্বর মাসের শেষার্ধে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মৃদু বা মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। একইসঙ্গে এ মাসে দেশের দক্ষিণ ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টি হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

দীর্ঘমেয়াদী পূর্বাভাস দিতে আবহাওয়া অধিদফতরের গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটি এ পূর্বাভাস দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঢাকার ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্রে কমিটির নিয়মিত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অধিদপ্তরের পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) ও বিশেষজ্ঞ কমিটির চেয়ারম্যান মো. আজিজুর রহমান এতে সভাপতিত্ব করেন।

বিশেষজ্ঞ কমিটির চলতি মাসের পূর্বাভাস প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ডিসেম্বর মাসে দেশের দক্ষিণ ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি এবং অবশিষ্টাংশে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হতে পারে।

চলতি মাসে বঙ্গোপসাগরে এক থেকে দুটি নিম্নচাপ সৃষ্টি হতে পারে জানিয়ে পূর্বাভাসে বলা হয়, যার মধ্যে একটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, তবে এটি বাংলাদেশ উপকূলে আসার সম্ভাবনা কম।

ডিসেম্বর মাসের শেষার্ধে দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে এক থেকে দুটি মৃদু (৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) বা মাঝারি (৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে পারে বলে দীর্ঘমেয়াদী পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে।

এতে আরও বলা হয়, ডিসেম্বর মাসে দিন ও রাতের তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে কমবে। তবে এ মাসে গড় তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকতে পারে। চলতি মাসে দেশের নদী অববাহিকায় ভোররাত থেকে সকাল পর্যন্ত হালকা বা মাঝারি ধরণের কুয়াশা পড়তে পারে। এ মাসে দেশের নদ-নদীতে স্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করতে পারে।

সদ্য শেষ হওয়া নভেম্বর মাসে সার্বিকভাবে সারাদেশে স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় ৮০ শতাংশ বৃষ্টি কম হয়েছে জানিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, তবে ময়মনসিংহ ও রংপুর বিভাগে বৃষ্টিপাতের কোন রেকর্ড পাওয়া যায়নি। গত ৯ নভেম্বর সকাল ছয়টায় দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়। ১৯ নভেম্বর এটি দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়। ১১ নভেম্বর সকাল ছয়টায় এটি একই এলাকায় নিম্নচাপে পরিণত হয়।

এতে আরও বলা হয়, নিম্নচাপটি পরবর্তীতে উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ১১ নভেম্বর রাত ৯টা নাগাদ ভারতের উত্তর তামিলনাড়ু-দক্ষিণ অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূল অতিক্রম করে উত্তর তামিলনাড়ু ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করে। এরপর এটি আরও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর ও দূর্বল হয়ে প্রথমে সুস্পষ্ট লঘুচাপ ও পরবর্তীতে লঘুচাপে পরিণত হয় এবং পরিশেষে গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে।

নিম্নচাপটির প্রভাবে ১২-১৫ নভেম্বর সময়ে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল ও সিলেট বিভাগে বিচ্ছিন্নভাবে হালকা থেকে মাঝারি ধরণের বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। ১৪ নভেম্বর সকাল ৬টায় দক্ষিণ আন্দামান সাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়, যা একইদিন সন্ধ্যা ছয়টায় আন্দামান সাগর এর কেন্দ্রভাগে অবস্থান নেয়। ১৫ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টায় এটি উত্তর আন্দামান সাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় এবং ১৬ নভেম্বর সকাল ছয়টায় দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান নেয়। ১৮ নভেম্বর সকাল ৬টায় এটি দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়। ১৮ নভেম্বর দুপুর ১২টায় একই এলাকায় নিম্নচাপে পরিণত হয়। এরপর নিম্নচাপটি পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ১৯ নভেম্বর সকাল ছয়টায় ভারতের পুদুচেরি ও চেন্নাইয়ের মধ্য দিয়ে উত্তর তামিল নাড়ু-দক্ষিণ অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূল অতিক্রম করে বলে দীর্ঘমেয়াদী পূর্বাভাস প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর আরও জানায়, নভেম্বর মাসে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে শূণ্য দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে শূণ্য দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস কম ছিল। নভেম্বরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৪ ডিগ্রি রেকর্ড করা হয় কক্সবাজার ও ফেনীতে। অপরদিকে সর্বনিম্ন ১১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায়।

শেয়ার করুন