অর্থপাচার: হাইকোর্টে যাচ্ছে ২৯ ব্যক্তি ও ১৪ প্রতিষ্ঠানের তালিকা

নিজস্ব প্রতিবেদক

হাইকোর্ট-দুদক

অর্থপাচার ও বিভিন্ন ধরনের আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে ২৯ ব্যক্তি ও ১৪ প্রতিষ্ঠানের তালিকা হাইকোর্টে জমা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। আগামীকাল রোববার সকালে এ তালিকা জমা দেবে সংস্থাটি।

আজ শনিবার সন্ধ্যায় বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান। তিনি বলেন, আমার সব প্রস্তুত করে রেখেছি। আগামীকাল কোর্ট খুললে সংশ্লিষ্ট শাখায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের তালিকা জমা দেব।

universel cardiac hospital

অভিযুক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিষয়ে প্রশ্ন করলে এই আইনজীবী বলেন, এখন কারো নাম প্রকাশ করবো না। কাল কোর্টে জমা দিলে তালিকা পেয়ে যাবেন।

তবে দুদকের একটি সূত্র জানিয়েছে, আলোচিত ব্যবসায়ী মুসা বিন শমসের, বিএনপি নেতা আব্দুল আওয়াল মিন্টু ও শিল্পপতি ফয়সাল আহমেদ চৌধুরীর নাম তালিকায় রয়েছে।

অভিযুক্তদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার কোনো বিষয় আছে কী না জানতে চাইলে এই আইনজীবী তা জানাতে অপারগতা প্র্রকাশ করেন।

অভিযোগ আছে, আমদানি-রপ্তানিতে আন্ডার ভয়েস এবং ওভার ভয়েস, হুন্ডিসহ নানান পদ্ধতিতে প্রতি বছর দেশ থেকে শত শত কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়। এ নিয়ে গত ২৭ নভেম্বর সংসদে প্রশ্নের মুখে পড়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল অর্থপাচারকারীদের তালিকা চান বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্যদের কাছে। তিনি বলেন, ‘আমি অর্থ পাচার করি না। আমি বিশ্বাস করি আপনারাও করেন না। আপনারা যদি একটি তালিকা না দেন তাহলে আমি কী করে জানব কারা অর্থ পাচার করছেন!’

অর্থমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের এক সপ্তাহ না পেরুতেই দুদকের তালিকা প্রস্তুতের খবর জানা গেল।

এর আগে গত ৭ জুনও একইরকম কথা বলেন অর্থমন্ত্রী। কারা অর্থপাচার করছে তাদের তথ্য সরকারের কাছে নেই জানিয়ে তিনি এ সংক্রান্ত তথ্য কারও কাছে থাকলে তা দিতে অনুরোধ জানান।

সংসদে বিরোধী সংসদ সদস্যদের উদ্দেশে তিনি বলেন, কারা দেশের টাকা নিয়ে যায়, সেই তালিকা আমার কাছে নেই।পাচারকারীদের নামগুলো আমাদেরকে দেন। তাদের ধরা আমাদের জন্য সহজ হবে।

অর্থ পাচার ঠেকাতে সরকার সক্রিয় রয়েছে দাবি করে অর্থমন্ত্রী বলেন, এখনও পাচারকারীদের অনেকেই জেলে আছে। বিচার হচ্ছে। আগে যেমন ঢালাওভাবে চলে যেত, এখন তেমন নেই।

তবে ২০২০ সালের নভেম্বর পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, বাংলাদেশ থেকে কানাডায় টাকা পাচারের যে গুঞ্জন আছে, তার কিছুটা সত্যতা তিনি পেয়েছেন। আর প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী টাকা পাচারের ক্ষেত্রে সরকারি কর্মচারীদের সংখ্যাই বেশি। টাকা পাচারের তথ্য পাওয়া ২৮টি ঘটনার মধ্যে সরকারি কর্মচারীই বেশি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ভাষায়, ‘প্রাথমিকভাবে কিছু সত্যতা পেয়েছি। মনে করেছিলাম রাজনীতিবিদদের সংখ্যা বেশি হবে। কিন্তু দেখা গেল, রাজনীতিবিদ চারজন। সরকারি কর্মচারীর সংখ্যা বেশি। এ ছাড়া কিছু ব্যবসায়ী আছেন।’

শেয়ার করুন