উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা কারান্তরীণ জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে গুপ্তচরবৃত্তি ও সরকারি কম্পিউটার হ্যাক করার অভিযোগে বিচারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দেওয়ার পক্ষে রায় দিয়েছে যুক্তরাজ্যের হাইকোর্ট।
শুক্রবার ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থা বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে।
খবরে বলা হয়, অ্যাসাঞ্জকে যুক্তরাষ্ট্রে হস্তান্তর করা হলে তিনি ‘আত্মহত্যা’ করতে পারেন এমন ঝুঁকি বিবেচনায় ব্রিটিশ জেলা আদালত গত এপ্রিলে তার প্রত্যর্পণ আটকে দিয়েছিল। ওই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করে জয় পেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
বিচারক টিমোথি হলরোয়েড বলেছেন, ওয়াশিংটনের তরফ থেকে যেসব ‘আশ্বাসে’ দেওয়া হয়েছে, তাতে তিনি সন্তুষ্ট।
ওই প্রতিশ্রুতিতে বলা হয়েছে, অ্যাসাঞ্জকে কলোরাডোয় তথাকথিত হাই সিকিউরিটি জেলে পাঠানো হবে না। অস্ট্রেলিয়ায় তার সাজার রায় হওয়ায় সাজা খাটার জন্য তাকে সেখানেও পাঠানো হবে না।
হাইকোর্টের এই রায়ের ফলে অ্যাসাঞ্জকে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দিতে বাধা কেটে গেল। অ্যাসাঞ্জ আড়াই বছরের বেশি সময় ধরে লন্ডনের বেলমার্শ কারাগারে আছেন।
অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক অ্যাসাঞ্জ ২০১০ সালে পেন্টাগন ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের লাখ লাখ সামরিক ও কূটনৈতিক গোপন নথি ফাঁস করে দিয়ে বিশ্বজুড়ে হৈ চৈ ফেলে দিয়েছিলেন।
ওই সব নথির মধ্যে মার্কিন বাহিনীর বিরুদ্ধে আফগান যুদ্ধসম্পর্কিত ৭৬ হাজার এবং ইরাক যুদ্ধ সম্পর্কিত আরো ৪০ হাজার নথি ছিল, যা যুক্তরাষ্ট্র সরকার ও পেন্টাগনকে চরম বেকায়দায় ফেলে দেয়। এরপর অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে মার্কিন সেনাবাহিনীর বিপুল পরিমাণ গোপন নথি ও কূটনৈতিক বার্তা ফাঁস করার ১৮টি অভিযোগ আনে যুক্তরাষ্ট্র। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতা।
এ নিয়ে আলোচনার মধ্যে সুইডেনে অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের মামলা হয়। গ্রেপ্তার এড়াতে ২০১২ সালে অ্যাসাঞ্জ লন্ডনের একুয়েডর দূতাবাসে আশ্রয় নেন। তারপর থেকে তিনি সেখানেই ছিলেন।
২০১৯ সালে জামিনের শর্ত ভঙ্গের অভিযোগে যুক্তরাজ্য পুলিশ অ্যাসাঞ্জকে গ্রেপ্তার করার পর থেকে বেলমার্শ কারাগারে বন্দি আছেন তিনি।