জয়ের জন্য প্রয়োজন হলো মাত্র ২০ রানের। তাতেও একটি উইকেট হারিয়ে বসে অস্ট্রেলিয়া। অ্যালেক্স ক্যারের উইকেট হারালেও অ্যাশেজ সিরিজের প্রথম টেস্টে জয় পেতে খুব বেশি বেগ পেতে হয়নি স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়াকে। ৫.১ ওভার ব্যাট করে ৯ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে জয় তুলে নিয়েছে প্যাট কামিন্সের দল। সে সঙ্গে অধিনায়ক হিসেবেও দারুণ যাত্রা হলো কামিন্সের।
ডেভিড মালান আর জো রুটের প্রতিরোধে তৃতীয় দিন শেষ বিকেলে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল ইংল্যান্ড। প্রথম ইনিংসের তুলনায় দ্বিতীয় ইনিংসে তাই ইংল্যান্ডকেও মনে হচ্ছিল অনেক পরিণত। তবে চতুর্থ দিন প্রথম সেশনেই সর্বনাশটা ঘটে গেলো ইংল্যান্ডের।
ডেভিড মালান আগের দিনের সঙ্গে মাত্র ২ রান যোগ করে এবং জো রুট মাত্র ৩ রান যোগ করে বিদায় নেন। আগেরদিন বিকালে মালান অপরাজিত ছিলেন ৮০ রানে এবং জো রুট অপরাজিত ছিলেন ৮৬ রানে। নাথান লায়ন আর ক্যামেরন গ্রিনের সামনে দিনের শুরুতেই বড় দুই উইকেটের পতন, ইংল্যান্ডের পরাজয় নিশ্চিত করে ফেলে।
২ উইকেটে ২২০ রান নিয়ে চতুর্থ দিন শুরু করার পর ইংল্যান্ড অলআউট হয়ে যায় ২৯৭ রানে। লিড দাঁড়ায় তাদের মাত্র ১৯ রানের। অস্ট্রেলিয়াও তুলে নেয় সহজ জয়।
তবে ইংল্যান্ডের আসল সর্বনাশ হয়েছিল প্রথম ইনিংসেই। অস্ট্রেলিয়ানদের বোলিং তোপের মুখে মাত্র ১৪৭ রানে অলআউট হয়ে গিয়েছিল তারা। ডেভিড ওয়ার্নার, মার্নাস ল্যাবুশানে এবং ট্রাভিস হেডের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের ওপর দাঁড়িয়ে ৪২৫ রানের বিশাল স্কোর গড়ে তোলে অসিরা। এর মধ্যে ট্রাভিস হেড তো সেঞ্চুরিই নয়, খেলেছেন ১৫২ রানের বড় ইনিংস।
প্রথম ইনিংসেই ২৭৮ রানে এগিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। ইংলিশদের যে অবস্থা ছিল, তাতে ইনিংস পরাজয়ই হয়তো অবধারিত ছিল তাদের জন্য। কিন্তু জো রুট আর ডেভিড মালানের লড়াইয়ে ইনিংস পরাজয়ের লজ্জাটা কোনোমতে এড়াতে সক্ষম হয় তারা। তবে তাতে, লাভ খুব বেশি হয়নি। কারণ, অস্ট্রেলিয়াকে তো বড় কোনো লক্ষ্যই দিতে পারেনি ইংলিশরা।
এর মধ্যে ইংল্যান্ডের মূল সর্বনাশটা করেন নাথান লিয়ন। আজ তিনি একাই নেন ৪ উইকেট। লিয়নের ঘূর্ণি তোপেই দ্রুত ইনিংস শেষ হয়ে যায় ইংল্যান্ডের। ডেভিড মালানকে তুলে নিয়ে চতুর্থ দিনের শুরুতেই অস্ট্রেলিয়াকে খেলায় ফিরিয়ে আনেন তিনি। ক্যামেরন গ্রিন তুলে নেন জো রুটের উইকেট।
এরপর বেন স্টোকস এসে ৪৯ বল মোকাবেলা করেন। রান করেন ১৪টি। কিন্তু স্টোকসের দৃঢ়তা ধোপে টিকলো না প্যাট কামিন্সের সামনে। গ্রিনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান স্টোকস। ওলি পোপ করেন মাত্র ৪ রান। তিনি আউট হন লিয়নের বলে।
জস বাটলার ছিলেন মিডল অর্ডারে ইংল্যান্ডের শক্তির বড় জায়গা। কিন্তু ৩৯ বল খেলে ২৩ রান করে তিনি ফিরে যান হ্যাজেলউডের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে। ক্রিস ওকসের উইকেট তুলে নেন ক্যামেরন গ্রিন। ১৬ রান করেন ওকস। শেষমেষ ইংল্যান্ডের লেজ মুড়ে দেন লিয়নই। ওলি রবিনসন এবং মার্ক উডকে ফিরিয়ে দিতেই ২৯৭ রানে শেষ হয়ে যায় ইংল্যান্ডের ইনিংস।
নাথান লিয়নের ৪ উইকেট ছাড়াও প্যাট কামিন্স এবং ক্যামেরন গ্রিন নেন ২টি করে উইকেট। মিচেল স্টার্ক এবং জস হ্যাজলেউড নেন ১টি করে উইকেট।