যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার পেছনে বড় ষড়যন্ত্র রয়েছে: আবদুর রশীদ

ডেস্ক রিপোর্ট

আবদুর রশীদ

মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে বাংলাদেশের র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) এবং এলিট ফোর্সটির সাবেক ও বর্তমান ৭ কর্মকর্তার ওপর যুক্তরাষ্ট্র যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে এর পেছনে বড় ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে মনে করছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) আবদুর রশীদ। তিনি বলছেন, বাংলাদেশকে জঙ্গিবাদের ঘাঁটি বানাতে যুক্তরাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতার গুঞ্জন রয়েছে বহুদিন ধরেই। কুচক্রীদের অনেক চেষ্টাই নস্যাৎ করে দিয়েছে র‌্যাব। এজন্য এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এর দ্বারা উদ্দেশ্য র‌্যাবকে মানসিকভাবে আঘাত করা। কুচক্রীরা চাইছে আবারো বাংলাদেশে জঙ্গিদের ঘাঁটি তৈরি করতে। কিন্তু বর্তমান সরকারের জিরো টলারেন্সের কাছে বারবার পরাজিত হয়েছে তারা।

শনিবার একটি অনলাইন পোর্টালের সঙ্গে আলাপকালে এই নিরাপত্তা বিশ্লেষক বলেন, ‘কথায় কথায় মানবাধিকারের অভিযোগ তোলা আমেরিকার নিজের দেশে কতটুকু মানবাধিকার রক্ষা হয়- সেটা দেখা উচিত। ইসরায়েল যখন নির্বিচারে ফিলিস্তিনিদের হত্যা করে তখন আমেরিকার চোখে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয় না? সৌদি যখন ইয়েমেনে হত্যাযজ্ঞ চালায় তখন মানবাধিকার লঙ্ঘন হয় না? আমেরিকান সৈন্যরা যখন নির্বিচারে ইরাক ও আফগানিস্তানে নিরীহ জনগণকে হত্যা করে তখন মানবাধিকার লঙ্ঘন হয় না? নিজ দেশে যখন কালোদের গুলি করে হত্যা করা হয় তখন মানবাধিকার লঙ্ঘন হয় না!’

আবদুর রশীদ বলেন, ‘কেউ বলতে পারবে না, রাজনৈতিক কারণে বা বিনা কারণে কেউ র‌্যাবের হাতে হয়রানির শিকার হয়েছেন। র‌্যাব দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে আসছে। বিশেষ করে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে র‌্যাবের অবদান ব্যাপক। তারা শুধু জঙ্গিদের আটক করে আইনের হাতে সোপর্দ করছে না, তাদের সাধারণ জীবনে ফিরিয়ে আনতে বিশেষ ভূমিকা রাখছে। যা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। তাই র‌্যাবকে জড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্রের এই নিষেধাজ্ঞা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেই আমি মনে করি।’

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) বিভিন্ন দেশের ১৫ ব্যক্তি ও ১০ প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট (রাজস্ব দপ্তর)। এতে বাহিনী হিসেবে র‌্যাব এবং এলিট ফোর্সটির বর্তমান ও সাবেক সাত কর্মকর্তার নাম রয়েছে।

মার্কিন রাজস্ব দপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিবৃতি অনুসারে, নিষেধাজ্ঞার তালিকায় বর্তমান পুলিশপ্রধান (সাবেক র‌্যাবপ্রধান) ড. বেনজীর আহমেদের নাম রয়েছে। বাকিরা হলেন র‌্যাবের বর্তমান মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) খান মোহাম্মদ (কেএম) আজাদ, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) তোফায়েল মোস্তফা সরওয়ার, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) মো. জাহাঙ্গীর আলম ও সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) মো. আনোয়ার লতিফ খান ও র‌্যাব-৭ এর সাবেক অধিনায়ক (লেফটেন্যান্ট কর্নেল) মিফতাহ উদ্দীন আহমেদ।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদ জানিয়েছে। শনিবার পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলারকে তার কার্যালয়ে তলব করে ঢাকার অসন্তোষের কথা জানিয়েছেন।

শেয়ার করুন