মহামারি করোনায় এরই মধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে বিশ্বের অনেক প্রতিষ্ঠান। আবার অনেক প্রতিষ্ঠান টিকে থাকতে এখনো কর্মীদের ছাঁটাই করছে। কমিয়েছে উৎপাদন, বেতন-ভাতা। চাকরি হারিয়ে বেকার জীবন পাড় করছেন বহু মানুষ। তবে করোনা মহামারির মধ্যে কর্মীদের ধরে রাখতে ও সহায়তা করতে ভিয়েতনামের কিছু কারখানা বেতন বাড়াচ্ছে। অর্থনীতি পুনরুদ্ধার ও কারখানাগুলোর উৎপাদন বাড়ানোই মূল লক্ষ্য তাদের। ভিএনএক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
চলতি মাসের শুরুতে ভিয়েতনামের হো চি মিন সিটির ইলেকট্রনিক্স পণ্য নির্মাতা কোম্পানি ডাটালজিক তাদের ৮শ কর্মচারীর বেতন ৭ দশমিক ছয় শতাংশ বাড়িয়েছে। কোম্পানির নির্বাহী কর্মকর্তা ট্রান তিয়েন ফাট বলেন, সামাজিক দূরত্বের পরবর্তী সময়ে কর্মীদের ৭৫ লাখ ডং (ভিয়েতনামের মুদ্রার নাম) ভাতা দেওয়া হবে। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে ভিয়েতনামের একটি বড় উৎসবকে সামনে রেখে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।
বিন তান জেলার সাইগন অ্যাকুয়াটিক প্রোডাক্টস ট্রেডিং জিএসসি আগামী বছর থেকে তাদের ৪শ কর্মীর বেতন কমপক্ষে পাঁচ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কোম্পানির চলতি বছরের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে কর্মীদের মূল বেতন ১০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। ফলে তাদের গড় আয় ৯০ লাখ ডংয়ে উন্নীত হয়েছে।
ওই কোম্পানির নির্বাহী প্রধান ট্রুং তিয়েন ডুং বলেন, করোনা মহামারিতে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি ও অনসাইট মডেলে কাজ করা অনেক চ্যালেঞ্জিং। অন্যদিকে উৎপাদনও কমেছে।
তিনি বলেন, আমরা ধীরে ধীরে আমাদের ক্ষতি পুষিয়ে ওঠার চেষ্টা করছি ও উৎপাদন ব্যবস্থা স্থিতিশীল রাখার চেষ্টা করছি। লক্ষ্য পূরণের জন্য কর্মীদের ধরে রাখা প্রয়োজন বলেও জানান তিনি। ভবিষ্যতে মুদ্রাস্ফীতি বাড়বে। তাই বেতন না বাড়লে কর্মীদের জীবন যাপনে রীতিমত লড়াই করতে হবে। ফলে তারা চাকরিও ছেড়ে দিতে পারে বলে উল্লেখ করেন তিনি। এসব কথা মাথায় রেখেই প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের বেতন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।
করোনা মহামারি রোধে বিধিনিষেধের কারণে তৃতীয় ত্রৈমাসিক ও অক্টোবরে এইচএমসি, ডং নাইসহ দেশটির দক্ষিণাঞ্চলের শিল্প কেন্দ্রগুলো থেকে লাখ লাখ কর্মী চাকরি ছেড়ে দেয়। তাই এ অঞ্চলের শিল্প-কারখানাগুলো কর্মীদের নানা উৎসাহ-উদ্দীপনা দিয়ে তাদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছে। এইচএমসি মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর জন্য তাদের কর্মীদের চার থেকে ১০ শতাংশ বেতন বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে।
এইচসিএমসি ইউনিয়ন অব বিজনেস অ্যাসোসিয়েশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান ট্রান ভিয়েত আনহ বলেন, অনেক কারখানা উচ্চ-দক্ষ শ্রমিকদের ধরে রাখার জন্য নিয়মিত বেতন বাড়াচ্ছে।
দেশটিতে ৫৪ হাজার কর্মী নিয়ে সম্প্রতি জরিপ চালিয়েছে একটি নিয়োগ সংস্থা। যেখানে দেখা গেছে, এক-তৃীতাংশ কর্মীর বেতন আগের বছরের তুলনায় আট শতাংশ বেড়েছে।