প্রবল ঘূর্ণিঝড় টাইফুন রাইয়ের আঘাতে লন্ডভন্ড দ্বীপরাষ্ট্র ফিলিপাইনে নিহতের সংখ্যা একলাফে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০৮ জনে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরও দুই শতাধিক মানুষ এবং এখনও অর্ধশতাধিক মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। সোমবার (২০ ডিসেম্বর) ফিলিপাইনের জাতীয় পুলিশ বিভাগ থেকে এই তথ্য জানানো হয় বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।
গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটির দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চলে আঘাত হানে শক্তিশালী টাইফুনে রাই। টাইফুনের তাণ্ডবের পর নিহতের সংখ্যা ১৩৭ জনে পৌঁছেছে বলে রোববার জানানো হয়েছিল। পরে সেটি একলাফে দুইশোর ঘর অতিক্রম করলো।
ঘণ্টায় ১৯৫ কিলোমিটার গতির বাতাস নিয়ে আঘাত হানা শক্তিশালী টাইফুন রাই’কে সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে প্রাণঘাতী টাইফুনগুলোর একটি হিসেবে বর্ণনা করা হচ্ছে। এছাড়া টাইফুনের পর দেশটির লাখ লাখ মানুষ বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। বিপর্যস্ত এলাকায় বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে।
সোমবার পুলিশের দেওয়া তথ্যে বলা হয়েছে, ফিলিপাইনের দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চলে গত শুক্রবার শক্তিশালী টাইফুন রাই আঘাত হানার পর এখন পর্যন্ত ২০৮ জনের প্রাণহানির তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। এছাড়া টাইফুনে আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২৩৯ জন এবং এখন পর্যন্ত ৫২ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
এদিকে টাইফুন রাই আতঙ্কে বাড়ি-ঘর এবং সমুদ্র তীরবর্তী রিসোর্টগুলো থেকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যান তিন লাখেরও বেশি মানুষ। বাড়ি-ঘর ছেলে পালিয়ে আসা আশ্রয়হীন ও বিপর্যস্ত মানুষের কাছে সুপেয় পানীয় এবং খাবার পৌঁছে দেওয়ার কাজ আরও জোরদার করেছে দ্বীপরাষ্ট্রটির প্রশাসন।
ফিলিপাইনের রেডক্রস বলছে, টাইফুন রাইয়ের আঘাতে উপকূলীয় এলাকা ‘পুরোপুরি লন্ডভন্ড’ হয়ে গেছে। দেশটির রেডক্রসের চেয়ারম্যান রিচার্ড গর্ডন জানিয়েছেন, ‘সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে অন্যতম শক্তিশালী এই টাইফুনের তাণ্ডবে বাড়ি-ঘর, হাসপাতাল, স্কুল এবং কমউনিটি ভবন টুকরো টুকরো হয়ে গেছে।’
এছাড়া দেশটির দক্ষিণপূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ দিনাগাতের কর্মকর্তারা বলেছেন, এই প্রদেশে প্রথম আঘাত হানে টাইফুন রাই। দিনাগাতের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা জেফরি বলেছেন, শক্তিশালী টাইফুনের আঘাতে দ্বীপটির দক্ষিণের প্রায় ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
প্রশান্ত মহাসাগর এবং দক্ষিণ চীন সাগরের কাছে অবস্থিত ফিলিপাইনে প্রায়ই প্রলয়ঙ্করী টাইফুন আঘাত হানে। দুর্যোগ-প্রবণ এই দেশটিতে ২০১৩ সালে টাইফুন হাইয়ান তাণ্ডব চালিয়ে ৬ হাজার ৩০০ জনের বেশি মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয়। ওই টাইফুনের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় আরও লাখ লাখ মানুষ।