রোহিঙ্গা ইস্যুকে পুঁজি করে বাণিজ্য বাড়াচ্ছে কিছু দেশ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

রোহিঙ্গা
ফাইল ছবি

রোহিঙ্গা ইস্যুকে পুঁজি করে পশ্চিমাসহ উন্নয়ন সহযোগি কিছু দেশ নিজেদের ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়াচ্ছে। বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে যাচ্ছে। অথচ পশ্চিমাসহ কিছু দেশ এখনো মিয়ানমারের সঙ্গে পুরোদমে ব্যবসা বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে রোহিঙ্গা সংকট এবং প্রত্যাবর্তন বিষয়ক এক আলোচনা অনুষ্ঠানে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুটি আন্তজার্তিক বিষয়। তাদেরকে নিজ দেশ মিয়ানমারে প্রত্যাবর্তনে আন্তজার্তিক মহলকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। রোহিঙ্গা সমস্যা মিয়ানমার শুরু করেছে, এখন তাদেরকেই এটি শেষ করতে হবে। মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের একসময় রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্ব ছিল। তারা সম্পদশালী ছিল। কিন্তু এখন তারা রাষ্ট্রবিহীন অবস্থায় রয়েছে।

মোমেন বলেন, মিয়ানমারে গণহত্যা ও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ইস্যু উন্নয়ন সহযোগী দেশগুলো কথাগুলো বলছে না। রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ দেশে ফেরাতে আন্তজার্তিক মহলের প্রয়োজনীয় ভুমিকা রাখতে হবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে উন্নয়ন সহযোগি কিছু দেশ রয়েছে যারা রোহিঙ্গা ইস্যুকে পুঁজি করে নিজেদের ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়াচ্ছে।

লেখক অভিজিৎ রায় হত্যা মামলায় দণ্ডিত পলাতক দুই আসামি সৈয়দ জিয়াউল হক, আকরাম হোসেনসহ এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের সম্পর্কে তথ্য চেয়ে ৫০ লাখ ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। গত সোমবার দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের আওতাধীন রিওয়ার্ড ফর জাস্টিস দপ্তর এ পুরস্কারের ঘোষণা দেয়।

অনুষ্ঠান শেষে বাংলাদেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্র চাপ দিচ্ছে কি না সাংবাদিকের প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এভাবে পুরস্কার ঘোষণা করে সফল হয়েছে। অনেক দেশে যখন তথ্য পাওয়া যায় না, আমি শুনেছি, ওসামা বিন লাদেনের ক্ষেত্রেও একইভাবে হয়েছে। এ পলিসি, কৌশল অনেক সময় সফল হয়।

তিনি বলেন, আমরা যেমন বঙ্গবন্ধুর তিন পলাতক খুনি, যাদের অবস্থান জানি না, তাদের জন্য পুরস্কার ঘোষণা করেছি। কেউ যদি সঠিক তথ্য দিতে পারেন, অবশ্যই সরকার তাদের পুরস্কার দেবে। যুক্তরাষ্ট্র এ রকম দিয়েছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে একজন মরলে বিচারবহির্ভূত হত্যা হয়, আর যুক্তরাষ্ট্রে মারা গেলে বলা হয় দায়িত্ব পালনের সময় মারা গেছে। আমাদের দেশে একজন মরলেই সংবাদপত্র বড় হরফে লিখে বিনা বিচারে হত্যা। ওই সব এখন তারা ফলো করে। আপনাদের কাজগুলো নিয়েই যেগুলো তাদের দরকার, সেগুলো করে।

অভিজিৎ হত্যা মামলাটি পুরোপুরি ফলো করেননি জানিয়ে মোমেন বলেন, এটা নিয়ে আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ভালো বলবেন। শুনেছি যে ওই মামলায় দণ্ডিত দুজন পলাতক। তারা কোথায় আছেন, কোন দেশে আছেন, আমরা তা জানি না। হয়তো মার্কিন এ উদ্যোগের (পুরস্কার ঘোষণা) ফলে আমাদের পলাতক খুনিদের ধরার যে প্রচেষ্টা, তাতে সহায়ক হবে।

তিনি বলেন, আমাদের দেশে কিছু লোক আছেন, যারা ধারাবাহিকভাবে মার্কিন আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করছেন। তারা মিথ্যা তথ্য দিচ্ছেন, মিথ্যা ভিডিও বানাচ্ছেন। আর আপনারা যেগুলো বলেন, সেগুলো ওরাও (যুক্তরাষ্ট্র) বলে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দেশের একদল লোক দেশের উন্নয়নে খুব সন্তুষ্ট নন। যারা মনে করেন, আওয়ামী লীগ এত ভালো করে ফেলছে কেন! সুতরাং তারা এটা পছন্দ করেন না। খুব সম্ভবত তারা তাদের (যুক্তরাষ্ট্রের) কাছ থেকে টাকা পান। তারা তথ্যগুলো ঠিকমতো দেন না, মিথ্যা তথ্য দেন। আর অনেকে তা বিশ্বাস করেন। সেখানে আমাদের কিছু কাজ করার সুযোগ আছে।

শেয়ার করুন