কক্সবাজারে বেড়াতে গিয়ে গৃহবধূ গণধর্ষণের শিকার হওয়ার ঘটনাটি আমাদের মর্মাহত করেছে। এ ধরনের অপরাধীদের অতি দ্রুত আইনের আওতায় আনার পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না কেন? আশা করব, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এ ঘটনায় জড়িত সবাইকে দ্রুত গ্রেফতার করতে সক্ষম হবে। যারা এ ধরনের দুধর্ষ ও অচিন্তনীয় ঘটনা ঘটায়, তারা যে আগে থেকেই নানা রকম অপরাধের সঙ্গে যুক্ত থাকে, এটা অনুমান করা যায়।
বিভিন্ন অপরাধ করে করে ছাড় পেয়ে যায় বলেই এরা বড় অপরাধে জড়িয়ে পড়ার সাহস পায়। ধর্ষণকারীদের জন্য যে কঠোর আইন তৈরি করা হয়েছে, তা সঠিকভাবে কার্যকর করা হবে, এটাই সবার প্রত্যাশা। আইন সঠিকভাবে কার্যকর করা হলে অন্যরা এ ধরনের অপরাধ সংঘটনের আগে চিন্তা করবে; সতর্ক হবে।
সমাজে সুস্থ ধারার বিকাশ নিশ্চিত করতে যে কোনো অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোর হওয়া জরুরি। কক্সবাজারে একজন গৃহবধূ গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন শুনে অত্যন্ত অসহায় বোধ করছি। আমাদের চারপাশের জগতটা সুন্দর করার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। সবার মধ্যে মানবিক বোধ জাগ্রত করতে যা যা করণীয়, তা করতে হবে। মানবিক সমাজ গড়তে সন্ত্রাসীদের দমনে সরকার সব ধরনের পদক্ষেপ নেবে, এটাই আশা করছি। আমরা এটাও আশা করছি, সামগ্রিকভাবে সুষ্ঠু-সুন্দর ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সরকার সব ধরনের পদক্ষেপ নেবে।
কতটা বেপরোয়া হলে এমন দুধর্ষ ঘটনা ঘটানোর চিন্তা করা যায়? আমরা শুনেছি, সমাজে অপরাধীরা সব সময় পালিয়ে বেড়ায়; কিন্তু যখন তারা বেপরোয়া হয়ে উঠে, তখন বুঝতে হবে এরা সংখ্যায় কম নয়। যাদের আশ্রয় ও প্রশ্রয়ে এই ঘটনায় জড়িতরা বেপরোয়া আচরণ করার সাহস পেয়েছে, তাদেরও খুঁজে বের করা দরকার। তা না হলে বারবার এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তির আশঙ্কা থেকেই যাবে।
যেহেতু এটি ঘটেছে দেশের একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন এলাকায়; সেহেতু এ ঘটনাকে আরও বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। আজকাল যে কোনো ঘটনা অতি দ্রুত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লেও যাতে পর্যটনে এর কোনো প্রভাব না পড়ে, সেজন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। পর্যটন খাত আমাদের দেশের অর্থনীতিতে কতটা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে, তা বহুল আলোচিত। পর্যটকদের সব ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
সেলিনা হোসেন : কথাসাহিত্যিক