ব্রাহ্মণবাড়িয়া জগত বাজারের ব্যবসায়ী ও নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক হত্যা মামলায় ১৩ আসামির মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। এছাড়া ৮ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একই সঙ্গে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তদের ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করা হয়। অনদায়ে তাদের আরও এক বছর কারাদণ্ড দেন আদালত।
আজ রোববার দুপুরে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান এই রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- বসু মিয়া, কবির মিয়া, মোখলেস, সাচ্চু মিয়া, জাহাঙ্গীর মিয়া, শহিবুর রহমান শুক্কি, লিয়াকত আলী, ইউনুছ মিয়া, রহমত উল্লাহ ওরফে ফারিয়াজ মিয়া, শিথিল আহমেদ ওরফে ফাহিম আহমেদ, সাইফুল, পাবেল এবং আলী মিয়া।
যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- নুরুল ইসলাম, হাবিবুর রহমান, রাসেল, মাজু মিয়া, গোলাপ মিয়া, সোহেল মিয়া, শাহজাহান ও বোরহান ওরফে রুহান।
রায় ঘোষণার সময় আদালতে ১৬ জন আসামি হাজির ছিলেন। পলাতক রয়েছেন ৫ আসামি। তারা হলেন- রহমত উল্লাহ ওরফে ফারিয়াজ মিয়া, শিথিল আহমেদ ওরফে ফাহিম আহমেদ, সাইফুল, পাবেল এবং আলী মিয়া। পলাতক ৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ১৪ নভেম্বর সন্ধ্যার পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া উত্তর পৌরতলা বাসস্ট্যান্ড থেকে জহিরুল হক নিজ গ্রাম পয়াগে ফিরছিলেন। পথে আসামি বসু মিয়া, হাবিবুর রহমান, শহিবুর রহমান ওরফে শুক্কি, কবির মিয়া, সাচ্চু মিয়া, মোখলেছ মিয়া, রুহান ওরফে বোরহান, শিথীল আহমেদ ওরফে ফাহিম আহমেদ, রহমত উল্লাহ ফারিয়াজসহ অন্য আসামিরা পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনাস্থলের পাশে অবস্থান করছিলেন।
জহিরুল ঘটনাস্থলে পৌঁছালে দুটি মোটরসাইকেলযোগে আসামিরা তার সিএনজি ব্যারিকেড দিয়ে আটকান। এসময় সিএনজিতে থাকা জহিরুলকে তারা আক্রমণ করে মারাত্মক জখম করেন। আসামিরা সিএনজিচালক গোলাপ মিয়াকেও আঘাত করেন।
ঘটনার সময় অন্যদিক থেকে আসা আরেকটি সিএনজির চালককে গোলাপ মিয়া বিষয়টি জানালে তিনি মোটরসাইকেল দুটি ধাওয়া করেন। পরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া উত্তর পৌরতলা সিএনজি স্ট্যান্ডে থাকা লোকজনের সহায়তায় মোটরসাইকেল দুটিসহ আসামি শিথিল ও ফারিয়াজকে আটক করে পুলিশে দেওয়া হয়।
জহিরুল হক ওইদিন রাত সাড়ে ৮টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই কবির হোসেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ২১ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলার ১৬ আসামি কারাগারে এবং বাকি পাঁচজন পলাতক।