এ বছর ৪ লাখ এক হাজার অভিবাসীকে স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ দিয়ে রেকর্ড করেছে কানাডা। বাৎসরিক হিসেবে এত বেশি অভিবাসী কানাডায় স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ গত ১০০ বছরে পায়নি।
আদিবাসীদের বাদ দিলে কানাডার জনসংখ্যার পুরোটাই অভিবাসীদের সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে। কানাডা তাদের জনসংখ্যা বৃদ্ধিকে দেশটির অর্থনীতির চালিকা শক্তি হিসেবে মনে করে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ক্ষমতায় আসার পর থেকে অভিবাসন সুবিধা অনেক বেড়েছে। কানাডার অভিবাসন মন্ত্রীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যারা নতুন করে দেশটিতে স্থায়ী বসবাসের সুযোগ পেয়েছেন, তাদের একটি বড় অংশ কানাডায় অস্থায়ীভাবে বসবাস করছিলেন।
কানাডায় অভিবাসীদের স্থায়ী বসবাসের সুযোগদান আগামী বছরও চলবে। ২০২২ সালে ৪ লাখ ২১ হাজার অভিবাসীকে দেশটিতে বসবাসের সুযোগ দিতে চায় কানাডা সরকার।
এ প্রসঙ্গে অভিবাসনমন্ত্রী সিন ফ্রাসার জানিয়েছেন, আমরা ইতিহাসে এক বছরে সর্বোচ্চ সংখ্যক নতুনদের স্বাগত জানাতে পেরেছি। এটি আমাদের দেশের জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত।
কানাডার বাংলা পত্রিকা ‘নতুনদেশ’ এর প্রধান সম্পাদক শওগাত আলী সাগর বলেন, অর্থনীতি এবং জনশক্তির খাতিরে কানাডা প্রচুর অভিবাসীকে স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ দেয়।
ক্যালগেরির রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী রূপক দত্ত বলেন, বন্ধুপ্রতিম কানাডা সরকার অভিবাসন নীতি অত্যন্ত সফলভাবে পরিচালনা করছে, তাই আমরা আশা করি প্রচুর সংখ্যক বাংলাদেশি কানাডায় এসে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিরাট ভূমিকা পালন করুক।
বিশিষ্ট কলামিস্ট উন্নয়ন গবেষক ও সমাজতাত্ত্বিক বিশ্লেষক মো. মাহমুদ হাসান বলেন, পুঁজিবাদী অর্থনীতির দেশ হয়েও কানাডা একটি অত্যন্ত টেকসই শক্তিশালী সাম্যভিত্তিক সমাজব্যবস্থা গড়তে সক্ষম হয়েছে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সামাজিক নিরাপত্তাসহ সকল মৌলিক মানবাধিকারের প্রশ্নে এদেশে কোনো ভিআইপি, ভিভিআইপি সংস্কৃতি গড়ে ওঠেনি। তাই অভিবাসন প্রত্যাশীদের পছন্দের তালিকায় কানাডা এখনও সবার শীর্ষে।
কানাডার অভিবাসন নীতি অনুসারে, প্রতিবছর দেশটির মোট নাগরিক অনুপাতে ১ শতাংশ মানুষকে অভিবাসন সুবিধা দেওয়া হবে। কানাডার বর্তমান জনসংখ্যা ৩ কোটি ৮ লাখ। সেই হিসাবে প্রতিবছর ৩ লাখ ৮০ হাজার অভিবাসী নেওয়ার কথা কানাডার। তবে প্রতিবছর এ সংখ্যা বাড়াচ্ছে সরকার।
এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, কানাডার বিচার ব্যবস্থা, নির্বাচনী প্রক্রিয়া, শিক্ষা ব্যবস্থা, চিকিৎসা, যোগাযোগ ব্যবস্থা, জীবনের নিরাপত্তা, স্থিতিশীল অর্থনীতি, শক্তিশালী ব্যাংকিং ব্যবস্থার কারণে বিশ্বে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে কানাডা।