রাত পোহালেই আরেকটি নতুন বছর। সহজাতভাবে মানুষ আশা করে নতুন দিন হয়তো আরেকটু ভালো যাবে। কিন্তু করোনার তাণ্ডবে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত রোধে বিশ্বব্যবস্থা যে ভঙ্গুরতা ও দুর্বলতার পরিচয় দিয়েছে তাতে বৈশ্বিক অঙ্গনে ভালো কিছু আশা করা ক্রমেই দুরাশা হয়ে যাচ্ছে। ফিলিস্তিন সংকট সমাধানের পথ প্রায় রুদ্ধ। ফিলিস্তিনবাসীর সীমাহীন নির্যাতন ও অধিকারহীনতাকে উপজীব্য করে ইসলামিস্ট উগ্রবাদীগোষ্ঠী বিশ্বব্যাপী মুসলিম যুবকদের সশস্ত্র জঙ্গিবাদে ভেড়াচ্ছে। উত্তর ও পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালি, নাইজার, বুরকিনা ফাসো ও নাইজেরিয়ায় আইএস আল-কায়েদা অনুসৃত জঙ্গিগোষ্ঠীর সশস্ত্র তত্পরতায় অনবরত রক্তক্ষরণ হচ্ছে, যার ফলে সেসব দেশে জঙ্গিবিরুদ্ধ সামরিক অভিযানে যোগ দিয়েছে ফ্রান্সের সেনাবাহিনী। তাতে সংকট বাড়ছে বৈ কমছে না। কারণ ওই সব দেশের মানুষ তাতে ফ্রান্সের ঔপনিবেশিক যুগের গন্ধ পাচ্ছে। আলশাবাব জঙ্গিগোষ্ঠীর সশস্ত্র তত্পরতায় সোমালিয়াসহ পার্শ্ববর্তী কেনিয়া ও তানজানিয়ায় প্রতিনিয়ত রক্তক্ষরণ হচ্ছে।
ইথিওপিয়ায় চলছে গৃহযুদ্ধ। গৃহযুদ্ধে জর্জরিত দক্ষিণ সুদানে চলছে দুর্ভিক্ষ, সেখানে মানবতার চরম বিপর্যয় চলছে। আফগানিস্তান থেকে আমেরিকান সেনাবাহিনীর অপ্রত্যাশিত লক, স্টক অ্যান্ড ব্যারেল প্রত্যাহার এবং বিশ্বস্বীকৃত আশরাফ ঘানি সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে উগ্রপন্থী ও বর্বরতার প্রতীক তালেবান বাহিনীর ক্ষমতা দখল পুরো দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তাব্যবস্থাকে চরম হুমকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে।
মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত ১১ লাখ রোহিঙ্গা শুধু বাংলাদেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে উঠছে তা-ই নয়, পুরো অঞ্চলকে অস্থিরতার মধ্যে ফেলে দিয়েছে এবং বিসিআইএম (BCIM) ও বিমসটেক (BIMSTEC)-এর মতো অপার সম্ভাবনাময় উদ্যোগগুলোকে অকার্যকর করে ফেলেছে। আফগানিস্তান, সিরিয়া, ভেনিজুয়েলাসহ বিভিন্ন দেশের প্রায় দুই কোটি মানুষ শরণার্থী ও ভাসমান জীবন যাপন করছে, যার সমাধানের কোনো পথ বের হচ্ছে না। শরণার্থী প্রবেশ ইস্যু এবং এশিয়ান ইমিগ্র্যান্টদের বিরুদ্ধে পশ্চিমা বিশ্বে ঘৃণা ও বিদ্বেষ বাড়ছে, ফলে ইউরোপ-আমেরিকায় উগ্র ডানপন্থী রাজনৈতিক দলগুলোর জনপ্রিয়তা ও শক্তি বৃদ্ধি পাচ্ছে। পশ্চিমা বিশ্বের ওরিয়েন্টালিস্ট কিছু বুদ্ধিজীবী তথাকথিত ‘ক্লাস অব সিভিলাইজেশন’-এর ধুয়া তুলে ইউরোপ-আমেরিকার রাজনৈতিক নেতাদের প্ররোচনা দিচ্ছে এই বলে যে পশ্চিমা মূল্যবোধের সঙ্গে ইসলামিক মূল্যবোধের সংঘর্ষ অনিবার্য। তাতে অ্যাকশন-রিঅ্যাকশনের সূত্রে শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদীরা যেমন, তেমনি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোয় ব্রাদারহুড আদর্শের চরমপন্থী ইসলামিস্টগোষ্ঠী সুবিধা পাচ্ছে।
এই যে সংকটগুলো তার কোনোটাই বিচ্ছিন্নভাবে ঘটছে না। শুধু পৃথিবী নয়, মহাশূন্যে প্রাধান্য বিস্তারেও পরাশক্তি, উঠতি পরাশক্তি ও আঞ্চলিক শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলো নিজস্ব ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থে নিজেদের শক্তিবলয়কে বৃদ্ধি করার চেষ্টা করছে, যার সবটাই পারস্পরিক স্বার্থবিরোধী। ইউক্রেন ও জর্জিয়াকে আমেরিকা ও ইউরোপ ন্যাটো সামরিক জোটভুক্ত করতে চায়। অন্যদিকে রাশিয়া শুধু তার ঘোরবিরোধী নয়, যুদ্ধে লিপ্ত হতেও দ্বিধা করবে না। ইউক্রেনকে কেন্দ্র করে ন্যাটো বাহিনী ও রাশিয়া উভয় পক্ষই এখন যুদ্ধাবস্থায় আছে। তবে জার্মানিসহ ইউরোপের কয়েকটি দেশ জ্বালানির জন্য রাশিয়ার গ্যাসের ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় একটা চেক অ্যান্ড ব্যালান্স আছে।
এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে ঘিরে চীন-আমেরিকার দ্বন্দ্ব এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বিপজ্জনক। আমেরিকা চাইছে চীনের উত্থান ও বিস্তার একটা জায়গা পর্যন্ত আসার পর অবশ্যই আটকে দিতে হবে। অন্যদিকে ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝিতে পশ্চিমা বিশ্ব, বিশেষ করে ইউরোপীয় শক্তির দ্বারা চরম অবমাননার শিকার চীন সব কিছু উতরে নিজেদের বিশ্ব শক্তির মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করতে সংকল্পবদ্ধ। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে শক্তিবলয়ের রাজনীতিতে পারস্পরিক সম্পর্কের জন্য প্রচলিত যে পাঁচটি পদ্ধতি (অ্যাকশন-রিঅ্যাকশন মডেল, ব্যালান্স অব পাওয়ার, এনগেজমেন্ট ও ডেটারেন্স) রয়েছে, তার প্রায় সব পদ্ধতির মিশ্রণে চীন-মার্কিন সম্পর্ক চললেও অ্যাকশন-রিঅ্যাকশন মডেলের পথেই বেশি হাঁটছে দুই পক্ষ। তাতে শান্তি ভঙ্গের শঙ্কা যেমন অনেক, আবার চেক অ্যান্ড ব্যালান্সও আছে।
বর্তমানকে বোঝার জন্য আরেকটু পেছনে তাকাতে হবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আমেরিকার নেতৃত্বে পুঁজিবাদী বিশ্ব ও সোভিয়েত ইউনিয়নের নেতৃত্বে কমিউনিস্ট বিশ্বের দ্বন্দ্ব-প্রতিযোগিতা সংঘাতের যাত্রা শুরু হয়। ১৯৪৯ সালে চীনে কমিউনিস্ট বিপ্লব সফল হওয়ায় পুঁজিবাদী বিশ্ব আঁতকে ওঠে। শুরু হয় স্নায়ুযুদ্ধ, পুঁজিবাদ ভার্সেস কমিউনিজম। তখন এটাই হয়ে ওঠে ভূ-রাজনৈতিক সমীকরণ ও মেরুকরণের প্রধান ফ্যাক্টর। কিন্তু অচিরেই কমিউনিস্ট ব্লকে ফাটল ধরে। প্রথমে স্তালিন এবং পরে ক্রুশচেভের একচ্ছত্র কর্তৃত্ববাদী একগুঁয়েমি দৃষ্টিভঙ্গির কারণে মাও জেদং প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হন। ষাটের দশক শুরু হওয়ার আগেই কমিউনিস্ট ব্লকের ঐক্য শুধু ভেঙে যায় তা নয়, সোভিয়েত ইউনিয়ন ও চীন পরস্পরের চরম শত্রুতে পরিণত হয়। এই সুযোগটিই গ্রহণ করে আমেরিকা।
১৯৭১ সালে চীন-আমেরিকা একত্র হয় সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে। আমেরিকার উদ্যোগে চীনকে জাতিসংঘে অন্তর্ভুক্তি ও নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য করা হয়, যা এত দিন ছিল তাইওয়ানের কাছে। তখন সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেটো দিলে চীন জাতিসংঘে প্রবেশ করতে পারত না। সেদিন সোভিয়েত নেতা ব্রেজনেভ রাজনৈতিক বাজি ধরেছিলেন। তিনি জানতেন চীন নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হয়ে আমেরিকার সঙ্গে জোট বাঁধলে সোভিয়েত ইউনিয়নের জন্য অস্তিত্বের সংকট সৃষ্টি হবে। কিন্তু নিরাপত্তা পরিষদে চীনের অন্তর্ভুক্তির প্রশ্নে সোভিয়েত ভেটো দিল না। হয়তো ঝুঁকি নিল এই ভেবে যে মৌলিক আদর্শের টানে দ্বন্দ্ব ভুলে চীন-সোভিয়েত আবার ঐক্যবদ্ধ হতে পারলে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমেরিকাকে কোণঠাসা করা সহজ হবে।
কিন্তু মাত্র ২০ বছরের মাথায় ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন ঘটে যায়। বিশ্বব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আসে। আমেরিকা একচ্ছত্র পরাশক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন চীনের জন্য বড় শিক্ষা হয়ে আছে; তার থেকে রাশিয়ার পুতিনও নিশ্চয় অনেক কিছুর সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। তাই সময়ের পরিক্রমায় বৈশ্বিক ভূ-রাজনীতির মাঠে চীন-রাশিয়া এখন একই প্ল্যাটফর্মে। দ্বন্দ্ব-প্রতিযোগিতায় পশ্চিম অর্থাৎ ইউরোপ ফ্রন্টে ও মধ্যপ্রাচ্যে রাশিয়ার স্বার্থ রক্ষায় চীন সমর্থন দিচ্ছে, আর পূর্ব ফ্রন্ট অর্থাৎ এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনের স্বার্থ রক্ষায় অকুণ্ঠ সমর্থন দিচ্ছে রাশিয়া।
এশিয়ার আঞ্চলিক সমীকরণে ভারতের অবস্থানটি গুরুত্বপূর্ণ। এ সম্পর্কে হেনরি কিসিঞ্জারের একটা মন্তব্য প্রণিধানযোগ্য। কিসিঞ্জার বলেছেন, Now India is in effect, a strategic partner of the US, not because of compatible domestic structures, but because of parallel security interests in South East Asia and the Indian Ocean, and vis-a-vis radical Islam (Ref: Tariq Fatemi, ‘Changing Equations in Asia’. The Bangladesh Observer 21 July 2005)| ২০১৩ সালে চীন রোড অ্যান্ড বেল্ট ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) প্রকল্প ঘোষণা করে। যার মাধ্যমে এশিয়া-আফ্রিকার এক শরও বেশি দেশে হাইওয়ে, রেলপথ ও সমুদ্রবন্দর নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করেছে। ২০২১ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য মতে, বিআরআইয়ের আওতায় ৩.৭ ট্রিলিয়ন ডলারের দুই হাজার ৬০০ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এগুলোর সফল বাস্তবায়নে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনের প্রভাব বৃদ্ধি পাবে।
এতেই শঙ্কিত পশ্চিমা বিশ্ব। তাই গত জুলাই মাসে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত জি-৭ গ্রুপের শীর্ষ বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় বিআরআইয়ের পাল্টা হিসেবে তারা এশিয়া-আফ্রিকাব্যাপী জলবায়ু, স্বাস্থ্য নিরাপত্তা, তথ্য-প্রযুক্তি ও নারী-পুরুষের বৈষম্য ঘোচাতে ২০৩৫ সাল নাগাদ ৪০ ট্রিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে। চায়নার বিস্তার ঠেকাতে আমেরিকার নেতৃত্বে এই অঞ্চলে কয়েকটি আধাসামরিক জোটও গঠিত হয়েছে। যার মধ্যে আমেরিকা, ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও জাপান মিলে হয়েছে কোয়াড।
আর ২০২১ সালে আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাজ্য মিলে হয়েছে অকাস (AUKUS)| এর ফলে আঞ্চলিক দেশগুলো এক প্রকার উভয়সংকটে পড়বে। ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনীতি ঠিক রাখতে হলে চীন থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া কঠিন। কিন্তু চীনের ভূ-রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সম্পর্কে সন্দিহান হওয়ায় আমেরিকার সঙ্গে মিত্রতার বন্ধন রক্ষা করা জরুরি। তাতে আঞ্চলিক অস্থিরতা বৃদ্ধি পাবে। জোট হিসেবে আসিয়ান দুর্বল হয়ে পড়বে। অস্ত্র প্রতিযোগিতার ফলে সামরিক খাতে ব্যয় বৃদ্ধি পাবে। তাতে দারিদ্র্য বিমোচন ও জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত প্রতিরোধ কর্মসূচি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আঞ্চলিক শান্তি ভঙ্গের বড় ইস্যু এখন তাইওয়ান সম্পর্কিত চীনের পরিকল্পনা। চীনের প্রকাশ্য ঘোষণা শান্তিপূর্ণ পন্থায় না হলে তারা সামরিক শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে তাইওয়ানকে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে একত্রীভূত করবে। তাতে আমেরিকার প্রতিক্রিয়া কী হবে সেটাই বিবেচ্য।
চীনের অপ্রতিরোধ্য উত্থানে আঞ্চলিক দেশগুলো উদ্বিগ্ন। কারণ অতীতের ইতিহাস ভালো নয়। ঊনিবংশ ও বিংশ শতাব্দীতে নেপোলিয়নসহ জার্মান ও জাপানের একচ্ছত্র অপ্রতিরোধ্য উত্থান বিশ্বশান্তি ভঙ্গের কারণ হয়েছে। তাই গ্রহণযোগ্য বিশ্ব শক্তি হতে চাইলে চীনকে প্রতিবেশীদের উদ্বিগ্ন দূর করতে হবে। তার সঙ্গে দায়িত্বশীলতার পরিচয়সহ বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক শক্তিবলয়ের সঙ্গে চীন কর্তৃক স্ট্র্যাটেজিক সমন্বয় সাধন করা হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকবে।
চীনের উত্থান ঠেকাতে আমেরিকার কাছে খুব বেশি বিকল্প নেই। আমেরিকা যে চেষ্টা করতে পারে—এক. চীন যাতে বিশ্বের এক নম্বর অর্থনৈতিক শক্তি না হতে পারে সেটি ঠেকিয়ে রাখা। দুই. রিজিম চেঞ্জ অর্থাৎ কমিউনিস্ট পার্টিকে ক্ষমতাচ্যুত করা। তিন. সোভিয়েতের মতো চীনকে ভেঙে ফেলা। কিন্তু বাস্তবতার নিরিখে এর কোনোটাই অর্জন সম্ভব নয়। অন্যদিকে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আমেরিকার জন্য হিতে বিপরীত হবে।
তাই চলমান বাস্তবতায় হেনরি কিসিঞ্জারের মন্তব্যই সঠিক বলে মনে হয়। কিসিঞ্জার তাঁর বিখ্যাত বই ‘হেনরুি কিসিঞ্জার অন চায়না’ গ্রন্থের ৫২৩ পৃষ্ঠায় বলেছেন, ‘Relations between China and United States need not@and should not@become a zero sum game. Consensus may prove difficult, but confrontation on these issues is self defeating’, তবে শঙ্কার জায়গা হলো দুই দেশের জনগণের মধ্যে পরস্পরের প্রতি বিদ্বেষ ও অসহযোগিতার ক্ষেত্র বাড়ছে। তাই আমেরিকার জন্য চীনকে ঠেকিয়ে রাখার নীতি, আর ২০৪৯ সালের মধ্যে ঐক্যবদ্ধ চীন এবং এক নম্বর অর্থনৈতিক ও সামরিক শক্তি হওয়ার ঘোষণা আগামী দিনে পরস্পরকে মুখোমুখি অবস্থানে রাখবে।
সুতরাং তাইওয়ান ইস্যু, দক্ষিণ চীন সাগর ও ভারত মহাসাগরে কর্তৃত্ব বিস্তারের প্রতিযোগিতা যেকোনো সময়ে উভয়ের জন্য নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। অন্যদিকে বিশ্ব অঙ্গনে ফিলিস্তিনসহ মধ্যপ্রাচ্য আগামী দিনেও হট ইস্যু হিসেবে থাকবে। আফগানিস্তানের তালেবান আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য নিয়ন্ত্রহীন হুমকি হয়ে বড় অঘটন ঘটাতে পারে। তাই সব কিছু মিলে ২০২২ সালে পৃথিবী আরো সংঘাতময় হয়ে উঠতে পারে।
লেখক : রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক
sikder52@gmail.com