গত ডিসেম্বর মাসে বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্র থেকে প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন ১৬২ কোটি ৯০ লাখ (১.৬২ বিলিয়ন) মার্কিন ডলার। এটি নভেম্বর মাসের তুলনায় ৭ কোটি ডলার বেশি। ফলে টানা ছয় মাস পর ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ফিরলো রেমিট্যান্স।
তবে একক মাস হিসাবে ডিসেম্বরে গত বছরের (২০২০ সালের ডিসেম্বর) একই মাসের তুলনায় রেমিট্যান্স কমেছে ৪৩ কোটি ডলার। গত বছরের ডিসেম্বরে রেমিট্যান্স এসেছিল ২০৫ কোটি বা ২ বিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে প্রাপ্ত তথ্য বলছে, সদ্য সমাপ্ত ডিসেম্বরে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের পরিমাণ ১৬২.৯ কোটি ডলার, যা টাকার হিসাবে (এক ডলার সমান ৮৫ টাকা ধরে) প্রায় ১৩ হাজার ৮৪৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
এর আগের মাস নভেম্বরে দেশে ১৫৫ কোটি ৩৭ লাখ (১.৫৫ বিলিয়ন) মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স আসে। টাকার হিসাবে যার পরিমাণ ছিল ১৩ হাজার ২০৬ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। সে হিসেবে ডিসেম্বরে ৬৪০ কোটি টাকা বেশি এসেছে।
এর আগের মাস অক্টোবরে সেপ্টেম্বরের তুলনায় প্রবাসী আয় কমে। অক্টোবরে ১৬৪ কোটি ৬৮ লাখ ডলার দেশে পাঠান প্রবাসীরা। টাকায় যার পরিমাণ ১৩ হাজার ৯৯৭ কোটি ৮০ লাখ টাকার (৮৫ টাকা ধরে) বেশি। সেপ্টেম্বরে প্রবাসী আয়ের পরিমাণ ছিল ১৭২ কোটি ৬৭ লাখ ডলার বা ১৪ হাজার ৬৭৬ কোটি ৯৫ লাখ টাকা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর মাসে প্রবাসী আয় কমে আগস্টের তুলনায় ৯ কোটি ডলার। গত আগস্ট মাসে প্রবাসী আয় ছিল ১৮১ কোটি ডলার, যা জুলাই মাসের চেয়ে ৬ কোটি ডলার কম। জুলাই মাসে ১৮৭ কোটি ডলার রেমিট্যান্স আসে, যা জুনের তুলনায় ৬ কোটি ৯৩ লাখ ডলার কম। জুন মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৯৪ কোটি ডলার, যা মে মাসের তুলনায় ২৩ কোটি ডলার কম।
এদিকে ব্যাংকগুলো শাখা ছাড়াও এজেন্ট ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং, ইন্টারনেট ব্যাংকিংসহ বিভিন্ন ডিজিটাল মাধ্যমে গ্রাহকদের দোরগোড়ায় রেমিট্যান্সের অর্থ পৌঁছে দিচ্ছে। এছাড়া বৈধপথে রেমিট্যান্সের ওপর সরকার আড়াই শতাংশ নগদ সহায়তা দেওয়ারে ঘোষণা দিয়েছে। যেটি এর আগে ২ শতাংশ পর্যন্ত ছিল।
চলতি বছরের (২০২২ সাল) ১ জানুয়ারি থেকে বর্ধিত নগদ সহায়তা বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে আরও জানা গেছে, ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) দেশে রেমিট্যান্স আসে ১ হাজার ২৩ কোটি ৯০ লাখ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ৮৭ হাজার ২১ কোটি ৩০ লাখ টাকা, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২৭৯ কোটি ৮২ লাখ ডলার কম। ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে রেমিট্যান্স আসে ১ হাজার ২৯৪ কোটি ২০ লাখ ডলার। দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ছিল ১ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা।
গত বছরের তুলনায় রেমিট্যান্স কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনার বিধিনিষেধ উঠে যাওয়ায় অবৈধ চ্যানেলে বিশেষ করে হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ লেনদেন বেড়েছে। তাছাড়া করোনার প্রভাবে প্রবাসীরা যেভাবে চাকরি হারিয়েছেন সেভাবে দেশের বাইরে নতুন শ্রমশক্তি নিয়োগ হয়নি।