টেস্ট ক্রিকেটে এমন দিন খুব কমই আসে বাংলাদেশের। বিশেষ করে নিউজিল্যান্ড, ইংল্যান্ডের মতো দেশগুলোতে। টেস্টের তৃতীয় দিন শেষ হয়ে গেলো এবং এখনও পর্যন্ত টেস্টের চালকের আসনে বাংলাদেশ- বিষয়টা স্বপ্ন নয়, সত্যি। মাউন্ট মঙ্গানুইয়ের বে ওভালে তৃতীয় দিন শেষে ৭৩ রানের লিড নিয়েই মাঠ ছেড়েছে বাংলাদেশ দল।
দ্বিতীয় দিন সকাল থেকেই বাংলাদেশের আধিপত্য। বোলারদের দাপটে নিউজিল্যান্ড অলআউট ৩২৮ রানে। জবাব দিতে নেমে মাত্র ২ উইকেট হারিয়ে ১৭৫ রান নিয়ে দিন শেষ করে টাইগাররা। হাফ সেঞ্চুরি করে (৬৪ রানে) নাজমুল হোসেন শান্ত আউট হয়ে গেলেও ৭০ রান নিয়ে উইকেটে ছিলেন মাহমুদুল হাসান জয়।
তৃতীয় দিনেও অসাধারণ ব্যাটিং করলেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা। জয়, মুশফিক, মুমিনুল আর লিটনের উইকেট হারাতে হয়েছে বাংলাদেশকে। এর মধ্যে কেবল মুশফিকই নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। বাকিরা খেলেছেন বিগ ফিফটির ইনিংস। যদিও সেঞ্চুরি করতে না পারার হতাশা উপহার দিয়েছেন তারা।
দিন শেষে বাংলাদেশের রান ১৫৬ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ৪০১। ২০ রান নিয়ে মেহেদী হাসান মিরাজ এবং ১১ রান নিয়ে ব্যাট করছেন ইয়াসির আলি রাব্বি।
প্রথমে মাহমুদুল হাসান জয়, পরে মুমিনুল হক, সর্বশেষ সেঞ্চুরি মিসের হতাশা উপহার দিলেন লিটন কুমার দাসও। ৮৬ রান করে আউট হয়ে গেলেন লিটন। অসাধারণ খেলতে খেলতেই হঠাৎ করে একটি লুজ শট খেলে ফেললেন লিটন দাস। শরীরের অনেক বাইরের বল খেলতে গিয়ে ব্যাটের কানায় লাগালেন। উইকেটের পেছনে টম ব্লান্ডেল ক্যাচটি তালুবন্দী করলে বিদায় নিতে হয় লিটনকে।
১৭৭ বল খেলেছিলেন বাংলাদেশের এই উইকেরক্ষক ব্যাটার। বাউন্ডারি মারলেন ১০টি। সেঞ্চুরি থেকে ১৪ রান দূরে থাকতে আউট হয়ে গেলেন তিনি। মাহমুদুল হাসান জয় আউট হয়েছেন ৭৮ রানে, মুমিনুল হক আউট হয়েছেন ৮৮ রানে।
এর আগে ৮৮ রানে আউট হয়েছিলেন মুমিনুল হক। ট্রেন্ট বোল্টের একটি বলে পরাস্ত হন তিনি। জোরালো আবেদন কিউই বোলার এবং ফিল্ডারদের। লম্বা আবেদনের সামনে আম্পায়ার বাধ্য হলেন আঙুল তুলে দিতে।
কিন্তু সন্তুষ্ট হতে পারলেন না মুমিনুল। তিনি রিভিউ চেয়ে বসলেন। তাতে দেখা গেলো, বলটি একটু উঁচুতে ছিল বটে। যদিও বল গিয়ে ভেতরের পায়ে আঘাত হানে। পরে ট্র্যাকারে দেখা গেলো বল আঘাত হানতো মিডল স্ট্যাম্পে। আম্পায়ারের সিদ্ধান্তই বহাল রইলো।
দিনের শুরুতে সেঞ্চুরিবঞ্চিত হয়ে আউট হয়েছিলেন ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়। তিনি করেছিলেন ৭৮ রান। সেঞ্চুরির আশা নিয়েই আজ ব্যাট করতে নেমেছিলেন মাহমুদুল হাসান জয়। দ্বিতীয় দিন শেষে তিনি অপরাজিত ছিলেন ৭০ রানে। তার সঙ্গী অধিনায়ক মুমিনুল হক অপরাজিত ছিলেন ৮ রানে। বাংলাদেশের স্কোর ছিল ২ উইকেটে ১৭৫ রান।
তৃতীয় দিন সকালে ব্যাট করতে নামার পর খুব বেশিক্ষণ টিকতে পারলেন না জয়। সেই নেইল ওয়াগনারের বলে ক্যাচ দিয়ে বসলেন হেনরি নিকোলসের হাতে। ওয়াগনারের বল কাট করতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বলটি ঠিকমতো ব্যাটে আসলো না। কাঁধ বরাবর উঠে গিয়েছিল। ব্যাটের কানা ছুঁয়ে বল চলে যায় গালিতে। সেখানে অসাধারণ ক্ষিপ্রতায় হেনরি নিকোলস বলটি তালুবন্দী করে নেন।
আর মাত্র ৮ রান যোগ করে, ব্যক্তিগত ৭৮ রানে আউট হয়ে গেলেন বাংলাদেশের তরুণ ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়। ২২৮ বল খেলে ৭৮ রান করেন তিনি। জয় আউট হতেই মাঠে নামেন মুশফিকুর রহিম। তবে তিনি খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি। ৫৩ বল খেলে ১২ রান করার পর ট্রেন্ট বোল্টের বলে বোল্ড হয়ে গেলেন। জুটিটা হলো মাত্র ১৯ রানের।