সদ্য বিদায়ী ২০২১ সালে সারাদেশে ৩ হাজার ৭০৩ জন নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ১ হাজার ২৩৫ জন, যেখানে ৬২৯ জন কন্যাশিশু। বছরজুড়ে ৩১ জনকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে, যেখানে ২২ জন কন্যাশিশু। ধর্ষণের কারণে আত্মহত্যা করেছেন সাতজন। ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে ৯৩ জন কন্যাশিশুসহ ১৫৫ জনকে। শ্লীলতাহানির শিকার হয়েছেন ১৪ জন কন্যাশিশুসহ ৩৩ জন। এছাড়া পুরো বছরে ৬২ জন কন্যাশিশুসহ ৯৫ জন যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছেন।
১৩টি দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে এ জরিপ প্রতিবেদন তৈরি করে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় লিগ্যাল এইড উপপরিষদ।
সোমবার (৩ জানুয়ারি) গণমাধ্যমকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ এসব তথ্য জানায়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ২০২১ সালে পাঁচজন কন্যাশিশুসহ এসিডদগ্ধের শিকার হয়েছে ২২ জন। যার মধ্যে মারা গেছেন চারজন। অগ্নিদগ্ধের শিকার হয়েছেন তিন কন্যাশিশুসহ ২৩ জন, তাদের মধ্যে মারা গেছেন ১০ জন। ১৫৩ জন কন্যাশিশুসহ নারী ও কন্যাশিশু অপহরণ হয়েছেন ১৮০ জন। এছাড়া আট কন্যাশিশুসহ ১১ জনকে অপহরণের চেষ্টা করা হয়েছে। ৪২ জন নারী ও কন্যাশিশু পাচার হয়েছে, এর মধ্যে ছয়জন কন্যাশিশু। পতিতালয়ে বিক্রি করা হয়েছে দুজনকে।
রিপোর্টে আরও বলা হয়, সদ্য শেষ হওয়া বছরটিতে উত্ত্যক্তের শিকার হয়েছেন ৩২ জন কন্যাশিশুসহ ৪৬ জন, এর মধ্যে একজন কন্যাশিশুসহ আত্মহত্যা করেছেন দুজন। যৌতুকের কারণে নির্যাতিত হয়েছেন এক কন্যাশিশুসহ ১৩৮ জন, ৪৫ জনকে যৌতুকের কারণে হত্যা করা হয়েছে। ৫৮ জন কন্যাশিশুসহ শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ২০৮ জন।
এছাড়া বছরজুড়ে হত্যা করা হয়েছে ১১৪ জন কন্যাশিশুসহ ৪৪৪ জন নারী ও কন্যাশিশুকে। ১৯ জন কন্যাশিশুসহ ৮৭ জনকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে ১৩১ জন কন্যাশিশুসহ ৪২৭ জনের। আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে ১২১টি, যার মধ্যে ৪৩ জন কন্যাশিশু। আত্মহত্যার প্ররোচনার ঘটনা ঘটেছে চারটি। পাঁচজন কন্যাশিশুসহ আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন ১১ জন। প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের ঘটনা ঘটেছে চারটি। ফতোয়ার ঘটনা ছিল দুটি।
বিদায়ী বছরে বাল্যবিয়ের ঘটনা ঘটেছে ৩২৭টি। এর মধ্যে প্রতিরোধ করা হয়েছে ৪৩টি। ২৩ জন কন্যাশিশুসহ ৬৩ জন সাইবার অপরাধের শিকার হয়েছেন। এছাড়া ২৬ জন নারী ও কন্যাশিশু অন্যান্য নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
জরিপে আরও উঠে এসেছে, করোনাকালে শুধু কিশোরগঞ্জ জেলায়ই একটি মাদরাসার ২৬০ জন ছাত্রীর বাল্যবিয়ের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া করোনা মহামারির দীর্ঘ দেড় বছরে শুধু টাঙ্গাইল জেলায়ই এক হাজার ২৪২টি বাল্যবিয়ের ঘটনা ঘটেছে।