বিশ্বে করোনায় সংক্রমণ ছাড়াল ২৯ কোটি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

করোনার ভয়াল রূপ
করোনার ভয়াল রূপ। ফাইল ছবি

চলমান করোনা মহামারিতে বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে। একইসঙ্গে আগের দিনের তুলনায় কমেছে নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যাও। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন প্রায় ৩ হাজার মানুষ। একই সময়ে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা নেমে এসেছে প্রায় সোয়া ৮ লাখে।

এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে। অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে রয়েছে রাশিয়া। প্রাণহানির তালিকায় এরপরই রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ভিয়েতনাম, তুরস্ক ও ইতালি। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২৯ কোটির ঘর। অন্যদিকে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫৪ লাখ ৬০ হাজার।

সোমবার (৩ জানুয়ারি) সকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২ হাজার ৯৫১ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে আট শতাধিক। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৫৪ লাখ ৬০ হাজার ৩০১ জনে।

একই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৮ লাখ ২৩ হাজার ৫০৬ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা কমেছে সাড়ে ৩ লাখেরও বেশি। এতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত ভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৯ কোটি ৬ লাখ ৩১ হাজার ৯১১ জনে।

এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৮৫ হাজার ১২২ জন এবং মারা গেছেন ১৬২ জন। করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৫ কোটি ৬১ লাখ ৪২ হাজার ১৭৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৮ লাখ ৪৭ হাজার ৪০৮ জন মারা গেছেন।

অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে রয়েছে রাশিয়া। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৮১১ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ১৮ হাজার ২৩৩ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১ কোটি ৫ লাখ ৩৭ হাজার ৯৬৬ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ১০ হাজার ৫১৮ জনের।

গত ২৪ ঘণ্টায় ফ্রান্সে সংক্রমণ অনেকটা কমে এসেছে। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৫৮ হাজার ৪৩২ জন এবং মারা গেছেন ৯১ জন। মহামারির শুরু থেকে এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ২ লাখ ৫০ হাজার ৩৫৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ২৩ হাজার ৯৪২ জন মারা গেছেন।

এছাড়া গত এক দিনে যুক্তরাজ্যে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫৮৩ জন এবং মারা গেছেন ৭৩ জন। মহামারির শুরু থেকে এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৩২ লাখ ৩৫ হাজার ৪০১ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৪৮ হাজার ৮৫১ জন মারা গেছেন। একই সময়ে ইতালিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৬১ হাজার ৪৬ জন এবং মারা গেছেন ১৩৩ জন।

এছাড়া জার্মানিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১২ হাজার ৬৩৬ জন এবং মারা গেছেন ৫২ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে ইউরোপের এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৭২ লাখ ৮ হাজার ৭৯০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ১২ হাজার ৮৭৮ জন মারা গেছেন। একই সময়ের মধ্যে ইউক্রেনে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ২ হাজার মানুষ এবং মারা গেছেন ৯৮ জন।

লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৩২ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ১ হাজার ৭২১ জন। অপরদিকে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২ কোটি ২২ লাখ ৯৩ হাজার ২২৮ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ১৯ হাজার ১৭১ জনের।

এদিকে করোনায় আক্রান্তের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। তবে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান তৃতীয়। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্ত ৩ কোটি ৪৯ লাখ ১৭ হাজার ৫৪৯ জন এবং মারা গেছেন ৪ লাখ ৮১ হাজার ৭৭০ জন।

এছাড়া করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ইরানে ৪১ জন, তুরস্কে ১২৯ জন, পোল্যান্ডে ৩৩ জন, দক্ষিণ আফ্রিকায় ৩০ জন এবং ভিয়েতনামে ২২১ জন মারা গেছেন। অন্যদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় মেক্সিকোতে মারা গেছেন ৯৭ জন। মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত উত্তর আমেরিকার এই দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ২ লাখ ৯৯ হাজার ৫২৫ জনের।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর ২০২০ সালের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে সংস্থাটি।

শেয়ার করুন