খোলা বাতাসে মুক্ত অবস্থায় থাকলে ৫ মিনিটের মধ্যেই ৯০ শতাংশ সংক্রমণ ক্ষমতা হ্রাস পায় সার্স-কোভ-২ বা করোনা ভাইরাসের এবং ৫০ শতাংশ সংক্রমণ ক্ষমতা ভাইরাসটি হারায় প্রথম ১০ সেকেন্ডের মধ্যেই। যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব ব্রিস্টলের সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে এ তথ্য।
মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে যুক্তরাজ্যের জাতীয় দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, এই গবেষণার মাধ্যমে আরও একবার প্রমাণিত হলো- করোনা ভাইরাস স্বল্প দূরত্বের মধ্যে ছড়ায় এবং এই ভাইরাসটির সংক্রমণ ঠেকাতে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা ও মাস্ক পরা কতখানি গুরুত্বপূর্ণ।
গবেষক দলের প্রধান ও ইউনিভার্সিটি অব ব্রিস্টলের অ্যারোসল রিসার্চ সেন্টারের পরিচালক প্রফেসর জোনাথন রিড দ্য গার্ডিয়ানকে বলেন, ‘মানুষের ধারণা, করোনা একটি বায়ুবাহিত রোগ এবং আলো-বাতাস কম আসে- এমন জায়গাতেই করোনা ছড়ায়। এ ধারণা যে একেবারে ভুল- তা আমি বলব না; তবে বাস্তব সত্য হলো এই রোগে সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি থাকবে যখন আপনি কোনো করোনা আক্রান্ত রোগীর কাছাকাছি অবস্থান করবেন।’
‘অন্যদিকে, আপনি করোনায় আক্রান্ত রোগীর থেকে যত দূরে থাকবেন- যেহেতু এটি একটি ভারী ভাইরাস ও বাতাসে বেশিক্ষণ ভেসে থাকতে পারে না, তাই আপনার সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনাও তত কমে যাবে। আর এই ভাইরাসটির সংক্রমণ ক্ষমতা খোলা বাতাসে ৯০ শতাংশ কমে যায়।’
তবে খোলা বাতাসে সংক্রমণ ক্ষমতা হারালেও তিন ঘণ্টা পর্যন্ত ভাইরাসটি বেঁচে থাকে বলে দ্য গার্ডিয়ানকে জানিয়েছেন জোনাথন রিড।
করোনা ভাইরাস উষ্ণ আবহাওয়ায় কম ছড়ায়- এমন একটি ধারণায় অনেকেই বিশ্বাস করেন; তবে জোনাথন রিড জানিয়েছেন এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। তিনি বলেন, ‘এই ভাইরাসটির সংক্রমণের ক্ষেত্রে তাপমাত্রা মোটেই গুরুত্বপূর্ণ কিছু নয়।’
মহামারিকে ঠেকাতে হলে শারীরিক দূরত্ব ও মাস্ক কতটা গুরুত্বপূর্ণ- তুলে ধরতে গিয়ে জোনাথন রিড বলেন, ‘আপনার পাশের ঘরে কেউ যদি করোনায় আক্রান্ত হন, সেক্ষেত্রে তার দ্বারা আপনার সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা যতটুকু, তারচেয়ে অনেক বেশি সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকে ওই সময়- যখন আপনি আপনার বন্ধু বা পরিচিত জনদের সঙ্গে রেস্টুরেন্ট বা পানশালায় যান।’
‘সুতরাং, যতদিন মহামারি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসছে- মাস্ক ও শারীরিক দূরত্বের কোনো বিকল্প নেই।’