বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ক্রমেই দেশেও করোনা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। টানা তিন মাস নিয়ন্ত্রণে থাকার পর গত কয়েক সপ্তাহ ধরে সংক্রমণ ও মৃত্যুর ঊর্ধ্বগতি দেখা যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভাইরাসটি নিয়ন্ত্রণে সরকারিভাবে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেওয়া হলেও সাধারণ মানুষ তা আমলে না নেওয়ার কারণে প্রতিদিনই শনাক্তের সংখ্যা বাড়ছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে ১৩ জানুয়ারি থেকে দেশে করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন মোকাবিলায় সরকারের আরোপ করা বিধিনিষেধ কার্যকর হচ্ছে।
এসময় ১১টি বিধিনিষেধ মেনে চলার কথা বলা হলেও গণপরিবহনে আসন সংখ্যার অর্ধেক যাত্রী পরিবহনের সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে শনিবার (১৫ জানুয়ারি) থেকে। গত ১০ জানুয়ারি বিকেলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনের প্রাদুর্ভাব ও দেশে এ রোগের সংক্রমণ পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত সভায় নেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সচল রাখা এবং সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ১৩ জানুয়ারি থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সার্বিক কাৰ্যাবলি ও চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করা হলো।
উল্লেখ করা যেতে পারে, দেশে করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনও ধরা পড়েছে বেশ কয়েকজনের দেহে। ওমিক্রন এখন সারাবিশ্বে এক আতঙ্কের নাম। এর সংক্রমণ ক্ষমতা অনেক বেশি। করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতেও নেওয়া হয়েছে নানা পদক্ষেপ। এ অবস্থায় দেশে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে সবাইকে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, বর্তমানে জনসাধারণের মধ্যে এ ব্যাপারে বড় ধরনের শৈথিল্য লক্ষ করা যাচ্ছে। রাস্তায়, এমনকি ভিড়ের মধ্যেও খুব কমসংখ্যক মানুষের মুখে মাস্ক দেখা যায়। এ শিথিলতা ভয়াবহ বিপদ ডেকে আনতে পারে। তাই মাস্ক পরা, জনসমাগম এড়িয়ে চলা, হাত স্যানিটাইজ করা ইত্যাদি বিষয়ে মানুষকে বাধ্য করার চেয়ে বেশি জরুরি এসব ব্যাপারে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা এবং বিধিনিষেধ মেনে চলতে বাধ্য করা।
দেশে আবারও লকডাউন বা সবকিছু বন্ধ করে দেওয়া কারও কাম্য নয়। কারণ এতে শিক্ষা ও আয়-রোজগারে যে স্থবিরতা নেমে আসে, তা সবার জন্য ক্ষতিকর। তাই করোনা পরিস্থিতির যাতে অবনতি না হয়, সেজন্য সবাইকে বিধিনিষেধ মেনে সতর্ক হয়ে চলতে হবে। আমরা দেশবাসীর কাছে সনির্বন্ধ অনুরোধ জানাই বিধিনিষেধ শতভাগ মেনে চলার। দেশে ওমিক্রনের আঘাত থেকে বাঁচতে হলে প্রত্যেককেই সচেতন ও সক্রিয় উদ্যোগ নিতে হবে। বিশেষ করে সবাইকে আরও সতর্ক ও সচেতন হতে হবে ।