পৌষের বিদায়ক্ষণ আজ। বারো মাসে তেরো পার্বণের দেশে এই পৌষ মাসের শেষ দিনটিতে শুরু হয়েছে পুরান ঢাকাবাসীর ঐতিহ্যবাহী উৎসব সাকরাইন। শুক্রবার (১৪ জানুয়ারি) সকালে সূর্যোদয়ের পর থেকেই বাসাবাড়ির ছাদে চলছে ঘুড়ি ওড়ানোর প্রস্তুতি। ঘুড়ি ওড়ানোর জন্য সুতা-মাঞ্জা দেওয়া থেকে শুরু করে পিঠা উৎসবেরও আয়োজন চলছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, সূর্যের আলো যখন মেলে ওঠে, তখনই আকাসে উড়তে শুরু করে ঘুড়ি। বাসাবাড়ির ছাদে কিশোর-কিশোরীদের ঢল আর হৈ-হুল্লোড়। আকাশে দেখা দিতে থাকে চোখদার, পানদার, বলদার, দাবাদার, লেজওয়ালা, পতঙ্গ ইত্যাদি নামের ঘুড়ির। শুরু হয় নিজের ঘুড়িকে সবচেয়ে উপরে তোলার প্রতিযোগিতা। শুরু হয় ঘুড়ি কাটাকাটির লড়াই।
আরও দেখা যায়, পুরান ঢাকার বাংলা বাজার এলাকার কয়েকটি বাসার ছাদেই এখনই শুরু হয়েছে সাউন্ড সিস্টেমে গানবাজনা।
দুপুরের পর থেকেই আকাশের বুকে বাড়তে থাকবে ঘুড়ির সংখ্যা। ঘরে ঘরে হবে পিঠাপুলির উৎসব। বেলা গড়িয়ে সন্ধ্যা হলেই আকাশে উড়বে রংবেরঙের ফানুস। আতশবাজির আলোয় উজ্জ্বল হবে পুরান ঢাকার আকাশ। সন্ধ্যা পার হলেই শুরু হবে সাউন্ড সিস্টেম আর নাচ-গান।
এদিকে ২০২২ সালের ইংরেজি নববর্ষের প্রথম প্রহর (৩১ ডিসেম্বর, ২০২১) উদযাপনের ফলে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে আগুনের ঘটনা ঘটে। এছাড়াও অনবরত আতশবাজির বিকট শব্দে নগরবাসী পড়েন ভোগান্তিতে। আতশবাজিতে কেঁপে ওঠে গোটা মহানগরী আর ফানুসের আগুন ছিটকে পড়ে বিভিন্ন এলাকার বাসাবাড়িতে।
এসব বিষয় মাথায় রেখে পৌষ-সংক্রান্তি বা সাকরাইন উৎসবের দিন বিকট শব্দের আতশবাজি ও ফানুস ওড়ানোয় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে বলে জানা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের এ তথ্য জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা সাকরাইন উৎসবে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার ব্যবস্থা করছি। আর যেন এভাবে উদযাপন না করা হয় সে জন্য পুরান ঢাকার বিভিন্ন কমিউনিটির নেতাদের সঙ্গে কথা বলবো।
তিনি বলেন, মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে এ ধরনের কার্যক্রম বন্ধ করা কঠিন। আমরা পুরান ঢাকার সর্দারদের নিয়ে বসে এ বিষয়ে কথা বলবো, এগুলো বন্ধের উদ্যোগ নিচ্ছি।