বহুল আলোচিত চার দলীয় জোট সরকারের আমলের ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলার ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদন) এবং আসামিদের আপিল শুনানির জন্য হাইকোর্ট কার্যতালিকায় এসেছে।
শনিবারে (১৫ জানুয়ারি) সুপ্রিম কোর্টের ওয়েব সাইটে দেখা যায়, বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি মো.আখতারুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চের রোববারের কার্যতালিকায় মামলাটি শুনানির জন্য এক নম্বরে রাখা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট কোর্টের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ থেকে এই মামলার শুনানির জন্য আমরা প্রস্তুতি নিয়েছি।
২০০৪ সালের ১ এপ্রিল মধ্যরাতে চট্টগ্রামের সিইউএফএল জেটিঘাটে খালাসের সময় ১০ ট্রাক সমপরিমাণ অস্ত্র জব্দ করে পুলিশ। এ ঘটনায় ২০১৪ সালের ৩০ জানুয়ারি বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় ১৪ জনকে ফাঁসিতে ঝোলানোর রায় দেন আদালত। অস্ত্র আইনের পৃথক দুটি ধারায় ১৪ জনের প্রত্যেককে দেওয়া হয় যাবজ্জীবন ও সাত বছর করে দণ্ডাদেশ।
মামলায় (বিশেষ ক্ষমতা আইনে) সাবেক শিল্পমন্ত্রী ও জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামী (মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসির দণ্ড কার্যকর), সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর এবং ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার সামরিক কমান্ডার পরেশ বড়ুয়া, এনএসআই’র সাবেক মহাপরিচালক অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, এনএসআই’র সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আব্দুর রহিম (গত বছরের ১৫ আগস্ট কারাবন্দি অবস্থায় ঢামেকে মৃত্যুবরণ করেন), ডিজিএফআই’র সাবেক পরিচালক (নিরাপত্তা) উইং কমান্ডার (অবসরপ্রাপ্ত) সাহাবুদ্দিন আহমেদ, এনএসআই’র সাবেক উপ-পরিচালক (অবসরপ্রাপ্ত) মেজর লিয়াকত হোসেন, এনএসআই’র সাবেক মাঠ কর্মকর্তা আকবর হোসেন খান, রাষ্ট্রায়ত্ত সার কারখানা চিটাগং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেডের (সিইউএফএল) সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহসিন উদ্দিন তালুকদার, সিইউএফএল’র সাবেক মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) কেএম এনামুল হক, সাবেক ভারপ্রাপ্ত শিল্প সচিব নুরুল আমিন, চোরাচালানী হিসেবে অভিযুক্ত হাফিজুর রহমান, অস্ত্র খালাসের জন্য শ্রমিক সরবরাহকারী দীন মোহাম্মদ ও ট্রলার মালিক হাজী আবদুস সোবহানকে আসামি করা হয়।
বিচারিক আদালতে রায়ের পর মামলার ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে পাঠানো হয়। এদিকে ২০১৪ সালের ১৬ এপ্রিল ফাঁসি ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ প্রাপ্ত কয়েক আসামির আপিল মামলা শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্ট। এছাড়া মামলায় পলাতক ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার সামরিক কমান্ডার পরেশ বড়ুয়া ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত শিল্প সচিব নুরুল আমিনের পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী (স্টেট ডিফেন্স ল’ইয়ার) নিয়োগ দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।